32.6 C
Dhaka
মঙ্গলবার, আগস্ট ১২, ২০২৫

মুসোলিনির দানব হয়ে ওঠার ইতিহাস

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
খবরের দেশ ডেস্ক :
২৯ জুলাই ১৮৮৩, ইতালির এক নিভৃত গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন এমন একজন, যাঁর নাম একসময় সারা ইউরোপের রাজনীতিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
বেনিতো মুসোলিনি শুধু ইতালিরই প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, ফ্যাসিবাদ নামের এক ভয়াল রাজনৈতিক মতবাদের প্রথম রাষ্ট্রীয় রূপদাতা হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন।
বিংশ শতাব্দীর শুরুর উত্তাল সময় মুসোলিনি ইউরোপীয় রাজনীতির এক প্রভাবশালী ও বিতর্কিত চরিত্রে পরিণত হন।
যুদ্ধ, একনায়কতন্ত্র, দমন–পীড়ন আর জাতীয়তাবাদে মোড়া তাঁর শাসনব্যবস্থা ইতালিকে যেমন এক নতুন মোড়ে দাঁড় করিয়েছিল, তেমনই বিশ্বরাজনীতিতে এক ভয়ংকর দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছিল।
ইতালির ছোট্ট শহর প্রেদাপ্পিওতে জন্ম নেওয়া এ মানুষটির জন্মদিনে ফিরে দেখা জরুরি, কীভাবে একজন শিক্ষক হয়ে উঠেছিলেন ইতিহাসের অন্যতম ভয়ংকর একনায়ক।
তার উত্থান–পতনের গল্প শুধু এক ব্যক্তির নয়, একটি গোটা সমাজ তথা রাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিবর্তনেরই কাহিনি।
মুসোলিনির দানব হয়ে ওঠার ইতিহাস বেশ লম্বা। তবে মূল পর্বটা শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, বা তার অল্প কিছু বছর আগে।
মুসোলিনির নেতৃত্বে ইতালি ১৯৩০–এর দশকে আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে।
তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগেই তাঁর সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষার পরিচয় দেন।
১৯৩৫ সালে তিনি আবিসিনিয়া (বর্তমান ইথিওপিয়া) আক্রমণ করে জয় করেন এবং জাতিপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আগ্রাসন চালিয়ে যান।
স্পেনের গৃহযুদ্ধে ফ্রাঙ্কোর ফ্যাসিবাদী বাহিনীকেও সমর্থন দেন মুসোলিনি।
ধীরে ধীরে তাঁর আদর্শ নাৎসি জার্মানির হিটলারের সঙ্গে মিলতে শুরু করে।
১৯৩৯ সালে হিটলারের সঙ্গে ‘প্যাক্ট অব স্টিল’ নামের চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে ইতালিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির আনুষ্ঠানিক মিত্র করে তোলেন তিনি।
আদর্শিকভাবে নাৎসিবাদের সঙ্গে মুসোলিনির ফ্যাসিবাদের কিছু পার্থক্য থাকলেও উভয় শাসকই কর্তৃত্ববাদ, জাতীয়তাবাদ ও সহিংসতা ব্যবহার করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।
হিটলার ও মুসোলিনির জোট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগুনে ঘি ঢালার কাজ করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির পক্ষে অবস্থান নেওয়া মুসোলিনির জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হয়ে ওঠে।
১৯৪৩ সালে মিত্রবাহিনীর আক্রমণে ইতালির বিভিন্ন এলাকা হাতছাড়া হতে শুরু করে।
ইতালির জনগণ ফ্যাসিবাদের প্রতি আস্থা হারান।
মুসোলিনিকে ইতালির রাজার পক্ষ থেকে বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে হিটলারের নাৎসি বাহিনী তাঁকে মুক্ত করে পুতুল রাষ্ট্র ‘সলো প্রজাতন্ত্র’ গঠনের পর এর প্রধান বানায়।
তবে এ পুতুল রাষ্ট্র স্থায়ী হয়নি।
১৯৪৫ সালের এপ্রিলে মিত্রবাহিনীর অগ্রযাত্রার মুখে পালানোর চেষ্টা করেন মুসোলিনি। কিন্তু লাভ হয়নি।
লোম্বার্দি অঞ্চলে পার্বত্য পথে পালানোর সময় প্রতিরোধ যোদ্ধারা তাঁকে আটক করেন।
২৮ এপ্রিল প্রেমিকা ক্লারা পেতাচ্চির সঙ্গে তাঁকে গু লি করে হ ত্যা করা হয়।
পরদিন মুসোলিনি ও তাঁর প্রেমিকার মরদেহ মিলান শহরের পিয়াতসালে লোরেতো চত্বরে উল্টো করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
এ দৃশ্য একই সঙ্গে যেমন প্রতীকী বিদ্রোহ ও ঘৃণা, তেমনই ইতিহাসের এক নিষ্ঠুরতম রাজনৈতিক সমাপ্তির প্রতীক হয়ে রয়েছে।
- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

বিমানের কুয়েত-দুবাইগামী দুটি ফ্লাইট বাতিল, রোমে এখনও গ্রাউন্ডেড ড্রিমলাইনার

খবরের দেশ ডেস্কঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বারবার যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড়োজাহাজের সংকট দেখা দিয়েছে। কোনো উড়োজাহাজ মেরামতের পর উড্ডয়ন...