Your Ads Here 100x100 |
---|
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইসরায়েলের প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তীকালীন বিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে তারা একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তির দাবি জানিয়েছে এবং সেই চুক্তির আওতায় ইসরায়েলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে তাদের হাতে থাকা বাকি সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলেছে সংগঠনটি।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে হামাসের শীর্ষ নেতা খলিল আল-হায়া জানান, তারা আর কোনো ধরনের অন্তর্বর্তী বা আংশিক চুক্তিতে সম্মত হবে না। বর্তমানে যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনায় হামাস প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন হায়া নিজেই।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, হামাসের এই কঠোর অবস্থান ইসরায়েলের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় এবং এতে গাজায় চলমান তেল আবিবের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে।
হায়া বলেন, “যুদ্ধের স্থায়ী অবসান, বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং গাজার পুনর্গঠনের বিষয়ে নিশ্চয়তা মিললেই আমরা জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তির আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “নেতানিয়াহু ও তার সরকার নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে আংশিক চুক্তিগুলোকে ব্যবহার করছে। এমনকি সব জিম্মিকে বলি দিয়েও তারা তা বাস্তবায়ন করতে চাইছে। আমরা এই প্রক্রিয়ার অংশ হতে চাই না।”
চলতি বছরের জানুয়ারিতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছিল, তা গত মাসে ভেঙে যায়। মিশরের মধ্যস্থতায় এখনও সেই চুক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চলছে, যদিও তা সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জেমস হিউইট বলেন, “হামাসের বক্তব্য প্রমাণ করে, তারা শান্তি নয় বরং দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা চায়। আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত: জিম্মিদের মুক্তি দাও, নয়তো ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হও।”
রয়টার্সের বরাত দিয়ে ফিলিস্তিনি ও মিশরীয় সূত্র জানায়, কায়রোতে সোমবার অনুষ্ঠিত সর্বশেষ আলোচনাতেও কোনো সমঝোতা হয়নি। ইসরায়েল ৪৫ দিনের একটি অন্তর্বর্তীকালীন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল, তবে এতে হামাসের আপত্তি রয়েছে।
এই প্রস্তাবে অন্যতম শর্ত ছিল হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, যা তারা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। সংগঠনটি বারবার বলেছে, ‘অস্ত্র সমর্পণ’ একটি স্পর্শকাতর ‘লাল রেখা’—যা নিয়ে আলোচনা কিংবা বিবেচনা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
হায়ার অভিযোগ, ইসরায়েল অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য শর্ত দিয়ে প্রস্তাব হাজির করছে, যেগুলোর পেছনে যুক্তি নেই।
জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতির পর হামাস এখন পর্যন্ত ৩৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মার্চে ইসরায়েল আবারও গাজায় স্থল ও বিমান হামলা শুরু করে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দাবি, বাকি ৫৯ জন জিম্মিকে মুক্তি এবং গাজার ‘নিরস্ত্রীকরণ’ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।
অন্যদিকে হামাস বলেছে, যুদ্ধ বন্ধে একটি চূড়ান্ত চুক্তি ছাড়া তারা কোনো জিম্মিকে মুক্তি দেবে না এবং যেকোনো পরিস্থিতিতেই তারা অস্ত্র ত্যাগ করবে না।