28 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৫

পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

কাশ্মীরে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে, এবং পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস রোববার (২৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত এই উত্তেজনা প্রশমনের পরিবর্তে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতার সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করেছেন। একই সঙ্গে, নয়াদিল্লিতে ১০০টিরও বেশি কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিদের ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে নেওয়া হয়েছে। তবে, এসব প্রচেষ্টা উত্তেজনা কমানোর জন্য নয়, বরং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে নেওয়া হয়েছে, এমন দাবি করেছেন একাধিক কূটনীতিক।

এর আগে এক ভাষণে মোদি সন্ত্রাসী আস্তানাগুলো ধ্বংস এবং কঠোর শাস্তির ঘোষণা দেন, যদিও সরাসরি পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করেননি।

অন্যদিকে, কাশ্মিরে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে এবং সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িতদের খোঁজে অভিযান চালাচ্ছে। সেখানে শত শত লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগেও ভারত পাকিস্তানের দিকে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধ করার ঘোষণা দেয় এবং পাকিস্তানি দূতাবাসের কিছু কর্মী ও ভারতে সফররত পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশত্যাগের নির্দেশ দেয়। পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো, বিশেষ করে কাশ্মির সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ভারতে মুসলিম বিরোধী মনোভাবও বৃদ্ধি পেয়েছে। কাশ্মিরের বাইরে অন্য শহরগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা কাশ্মিরি শিক্ষার্থীরা ব্যাপক হয়রানির শিকার হচ্ছেন এবং অনেকেই বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে আসছেন।

এদিকে, হামলার পাঁচ দিন পরও ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নাম ঘোষণা করেনি এবং হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের জড়িত থাকার জন্য খুব কম প্রমাণ প্রকাশ করেছে। পাকিস্তান সরকারও এই হামলায় নিজেদের জড়িত থাকার অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে ভারতীয় কর্মকর্তারা পাকিস্তানের অতীতের সন্ত্রাসবাদে সহায়তার ইতিহাস তুলে ধরেছেন এবং জানান, সর্বশেষ এই হামলার ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং হামলাকারীদের পাকিস্তানের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে এমন কিছু প্রযুক্তিগত প্রমাণ পাওয়া গেছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইরান এবং সৌদি আরব উভয় দেশকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতিতে কতটা সক্রিয় ভূমিকা রাখবে, তা স্পষ্ট নয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম তিন মাস পার হয়ে গেলেও এখনও ভারতে কোনও মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেওয়া হয়নি, যা দক্ষিণ এশিয়াকে ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্রাধিকারের তালিকায় নিচে থাকার ইঙ্গিত দেয়।

নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ভারতের কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক শক্তির কারণে আন্তর্জাতিক চাপের প্রভাব এখন অনেকটাই কম। ফলে, ভারত চাইলে একতরফা পদক্ষেপ নিতে পিছপা হবে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৬ ও ২০১৯ সালের মতো এবারও ভারত পাকিস্তানে সীমান্ত পেরিয়ে বড় ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। তবে, পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেওয়ার হুমকি দিয়েছে এবং বলেছে, ভারতের যেকোনো আক্রমণের চেয়ে আরও বড় প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে।

বিশ্লেষক ড্যানিয়েল মার্কির মতে, ‘উভয় পক্ষই নিজেদের ক্ষমতা অতিরঞ্জন করছে, ফলে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।’ এক কূটনীতিক মন্তব্য করেছেন, ‘অতীতের রেকর্ডের ভিত্তিতে কি পরমাণু অস্ত্রধারী প্রতিবেশীর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করা উচিত?’

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

শেখ হাসিনা ফিরে এলে জনগনই ব্যবস্থা নিবে- বিএনপি মহাসচিব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনেকেই আশঙ্কা করছেন, ফ্যাসিবাদী চরিত্র নিয়ে শেখ হাসিনা আবারো ফিরে...