Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্কঃ
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মেয়র পদের স্বীকৃতি ঘিরে নির্বাচন কমিশনের অবস্থানকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এই ইস্যুকে ঘিরেই জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বিএনপির মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন ও দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। দুই দলই এখন একই ইস্যুতে ভিন্নভাবে রাজপথে সক্রিয়, ফলে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের ‘শক্তি পরীক্ষার’ আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে গত এক সপ্তাহ ধরে নগর ভবনের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তার সমর্থকরা। এর মধ্যেই মঙ্গলবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, প্রয়োজনে দলগতভাবে এই আন্দোলনে সমর্থন দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, ইশরাক হোসেনকে ঘিরে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে পক্ষপাতদুষ্ট আখ্যা দিয়ে মঙ্গলবার রাতেই সংবাদ সম্মেলন করেছে এনসিপি। দলটির দাবি, নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের আচরণে দেশে একটি জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যার জন্য কমিশন দায়ী।
এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে বুধবার এনসিপি নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে। সকাল থেকেই রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় নির্বাচন ভবনের আশেপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কড়া অবস্থান নেয়। বিক্ষোভে অংশ নিয়ে এনসিপি নেতা নাসিরউদ্দিন পাটওয়ারী নির্বাচন কমিশনকে “বিএনপির মুখপাত্র” বলে অভিযোগ করেন।
বিএনপি ও এনসিপির এই সমান্তরাল রাজনৈতিক কর্মসূচিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দেখছেন দুই দলের কৌশলগত ভিন্নতা ও শক্তির প্রকাশ হিসেবে। বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদের মতে, মেয়র নির্বাচনের পাঁচ বছর পর ইশরাক ইস্যুতে নতুন করে আন্দোলন শুরু করে বিএনপি ‘শো-ডাউনের’ রাজনীতি করছে। এতে বোঝা যায়, অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে তাদের সন্দেহ রয়েছে এবং বিএনপি চায় নির্বাচন নিয়ে দ্রুত ও নির্দিষ্ট সময়সূচি ঘোষণা।
অন্যদিকে এনসিপির অবস্থান আরও আক্রমণাত্মক। দলটি নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠনের দাবিতে সরাসরি মাঠে নেমেছে এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে জাতীয় সংকট নিরসনের একমাত্র উপায় হিসেবে দেখছে।
হাইকোর্ট ইতোমধ্যে ইশরাকের মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার পথে বাধা নেই বলে রায় দিলেও রাজনৈতিক উত্তাপ কমছে না। বরং, এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও এনসিপির পারস্পরিক সন্দেহ ও দ্বন্দ্ব আরও স্পষ্ট হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই দ্বন্দ্ব শুধু রাজনৈতিক কৌশল নয়, বরং ক্ষমতার কেন্দ্রে অবস্থান নিশ্চিত করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ। যার ফলে আগামী দিনগুলোতে বিএনপি, এনসিপি ও সরকার—এই তিন পক্ষের মধ্যকার সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠবে।