Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্কঃ
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা শুক্রবার টোকিওতে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে ৬টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। পাশাপাশি, বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা এবং রেলপথ উন্নয়নের জন্য ১.০৬৩ বিলিয়ন ডলারের অর্থ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ড. ইউনূস ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করেন। রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে জাপানের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি। বৈঠকের পর উভয় পক্ষ যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়টি পয়েন্ট তুলে ধরা হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব স্মরণ করে দুই দেশ কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
ইশিবা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের শান্তিপূর্ণ উত্তরণে সহযোগিতা ও সমর্থন ঘোষণা করা হয়। ড. ইউনূস জাপানের মহেশখালী-মাতারবাড়ি সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ (MIDI) এবং বঙ্গোপসাগরীয় শিল্প বৃদ্ধি বেল্ট (BIG-B) প্রকল্পের প্রশংসা করেন।
বৈঠকে উন্নয়ন নীতিমালা ঋণ, বিশেষ করে জয়দেবপুর-ঈশুরদী সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরকে স্বাগত জানানো হয়। জাপানি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও ব্যবসায় সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে দুই পক্ষ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।
বিডিএ-তে ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস), প্রিপেইড গ্যাস মিটার, ব্যাটারি চালিত সাইকেল কারখানা, তথ্য সুরক্ষা পাইলট প্রকল্প এবং বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভূমি চুক্তি এ উদ্যোগের মধ্যে অন্যতম।
জাপান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পাঁচটি টহল নৌকা সরবরাহসহ রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি হস্তান্তর চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করার আশা ব্যক্ত করা হয়।
দুই দেশের মধ্যে দক্ষ মানবসম্পদ বিনিময় ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে একমত হয়। ড. ইউনূস জাপানের মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প বৃত্তিসহ অব্যাহত সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইশিবাকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী ইশিবা মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুতদের জন্য বাংলাদেশের মানবিক সহযোগিতার প্রশংসা করেন। ড. ইউনূস ভাসান চরের বাস্তুচ্যুতদের জন্য জাপানের মানবিক সহায়তাও স্মরণ করেন। দুই দেশই বাস্তুচ্যুতদের নিরাপদ, স্বেচ্ছাসেবী ও মর্যাদাসম্পন্ন প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে সংকটের টেকসই সমাধানে অংশীদারদের আন্তরিক সংলাপের গুরুত্ব স্বীকার করে।
বৈঠকের শেষে ড. ইউনূস প্রধানমন্ত্রী ইশিবা ও জাপানের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার নতুন যুগের সূচনা করেছে এই বৈঠক।