Your Ads Here 100x100 |
---|
বগুড়া প্রতিনিধি:
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে। আর কোরবানির ঈদ মানেই কামারপল্লীতে বাড়তি ব্যস্ততা। বগুড়ার আদমদীঘির তালশন, সান্তাহারসহ বিভিন্ন কামারপল্লীতে এখন টুং-টাং শব্দে মুখর প্রতিটি সকাল। কামারদের হাতুড়ির শব্দ জানান দিচ্ছে, ঈদের প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে।
নতুন দা-ছুরি তৈরির পাশাপাশি পুরোনোগুলোয় শান দিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন গ্রাহকেরা। কেউ এনেছেন গত বছরের কোরবানির কাজে ব্যবহৃত দা-বটি, কেউ আবার নতুন ছুরি বা চাপাতির অর্ডার দিচ্ছেন। চাহিদা বেড়েছে সবকিছুর—আর সেই চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে দামও।
দামের চাপে গরুর মালিক, ব্যস্ততায় কামার
সাধারণ সময়ে যে দা-বটিতে শান দিতে ১৮০ টাকা লাগে, সেখানে এখন গুণতে হচ্ছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে নতুন একটি ছুরি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। বিভিন্ন সাইজের চাকু ৪০ থেকে ১০০ টাকা, বটি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, চাপাতি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং বড় দা এক হাজার টাকায় পৌঁছেছে।
তালশন গ্রামের কামার সাধন মহন্ত বলেন, ‘বাপ-দাদার পেশা ছাড়তে পারিনি। সারাবছর কাজ তেমন হয় না, এই সময়টাতেই ব্যবসা হয় ভালো। তবে এবার নতুন ছুরির বিক্রি কম, সবাই পুরাতনগুলোতেই শান দিচ্ছেন।’
সান্তাহারের পুরাতন বাজারের কামার সাদ্দাম হোসেন জানালেন, ‘সারা বছর এমন কাজ থাকলে সংসারে অভাব থাকত না। ঈদের সময়টায় একটু রোজগার হয়, তবে লোহা-কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভ আগের মতো হয় না।’
দাম বাড়ার কারণ বলছেন কামারেরা
কারিগরেরা বলছেন, লোহা, ইস্পাত ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদেরও দামের ভার বহন করতে হচ্ছে। এক কামার বলেন, ‘আমাদের লাভ না থাকলে ব্যবসা টিকবে কীভাবে? আমরা যে দামে কিনি, সেই অনুযায়ী বিক্রি না করলে টিকে থাকা মুশকিল।’
কোরবানির ঈদে ছুরি-চাপাতি আবশ্যিক
ঈদুল আজহা মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। এ সময় পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুতের কাজে দা, ছুরি, বটি, চাকু ও চাপাতির বিকল্প নেই। সাধারণত প্রত্যেক পরিবারেই থাকে নিজস্ব ছুরি বা চাপাতি। কেউই চান না অন্যের জিনিস ব্যবহার করতে। তাই পুরোনো যন্ত্রপাতি ঘষামাজা করে নতুনের মতো করে নেওয়ার চল আছে গ্রামাঞ্চলে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আদমদীঘির কামারপল্লীতে চলছে উৎসবমুখর প্রস্তুতি। দোকানের সামনে লাইন, এক কামার হাতুড়ি চালাচ্ছেন, আরেকজন লোহার টুকরো আগুনে গরম করে তুলছেন ঘাম ঝরানো দক্ষতায়। ঈদের আগে এমন কর্মব্যস্ততা আরও কয়েকদিন চলবে বলেই জানালেন স্থানীয় কামাররা।