Your Ads Here 100x100 |
---|
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকার টালবাহানা করছে বলে মনে করেন বিএনপি নেতারা । নানা এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায় বলেই সরকার নির্বাচন বিষয়ে সময়ক্ষেপণ করছে বলে অভিযোগ তাদের। তবে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে এখনই সরাসরি কোনো দ্বন্দ্বে জড়াতে চান না। সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সরকারকে অব্যাহতভাবে চাপে রাখবেন তারা।
গত সোমবার রাতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে এতে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সূত্র জানায়, বৈঠকে নেতারা একমত হন, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ষড়যন্ত্র মোকাবিলা এবং দেশে স্থিতিশীলতা ফেরাতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন প্রয়োজন। বিভিন্ন ফোরাম থেকে তারা এ দাবি অব্যাহতভাবে তুলে ধরবেন। ঈদুল আজহার পর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তারা করণীয় নির্ধারণ করবেন। এদিকে ঐকমত্য কমিশনের চাপিয়ে দেওয়া কোনো সংস্কার প্রস্তাব না মানার সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে।
সংস্কার ইস্যুতে ওই দিন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার বিষয়বস্তু সভায় উপস্থাপন করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। শুধু একটি দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়– ড. ইউনূসের এ বক্তব্যের শক্ত প্রতিবাদ ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে জানানো হয়েছে বলে স্থায়ী কমিটিকে অবহিত করা হয়।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতারা বলেন, সরকারের সঙ্গে এখন পর্যন্ত বিএনপির যে আলোচনা হয়েছে, এতে নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। এ পরিস্থিতিতে সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়, সেটি দেখার অপেক্ষায় তারা। ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারকে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দলটি আশা করে, সরকার দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।
উচ্চ আদালতের রায়ের পরও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর বিষয় নিয়েও আলোচনা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে। দলটি মনে করে, সরকার শপথ প্রক্রিয়া ঝুলিয়ে রেখেছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বলেছেন, এটি (শপথ) নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিষয়। তাই বিএনপি এখন অপেক্ষা করছে ইসির সিদ্ধান্তের জন্য। একই সঙ্গে মেয়র পদে ইশরাককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে তাঁর সমর্থক ও ঢাকাবাসী নগর ভবন প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে যে কর্মসূচি পালন করছে, সেটির প্রতিও বিএনপির সমর্থন রয়েছে।
এ ছাড়া ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে আন্দোলন নিয়ে স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। দলটি সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। দলের নেতারা মনে করেন, বিষয়টি সরকার সঠিকভাবে হ্যান্ডেল করতে পারছে না। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে।
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভার্চুয়ালি অংশ নেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ। অনলাইনে আরও যুক্ত ছিলেন মির্জা আব্বাস।