Your Ads Here 100x100 |
---|
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
রাশিয়ার অভ্যন্তরে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক ড্রোন হামলার জবাবে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিষয়টি নিয়ে বুধবার এক ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে বলেন, “আমরা ইউক্রেনের দ্বারা রাশিয়ার নোঙর করা বিমানবহরের ওপর হামলা এবং উভয় পক্ষের সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রেসিডেন্ট পুতিন স্পষ্ট জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বিমানঘাঁটির ওপর হামলার উপযুক্ত জবাব তিনি দেবেন।”
ট্রাম্প আরও জানান, “আলোচনাটি ইতিবাচক হলেও তাৎক্ষণিকভাবে শান্তির কোনো অগ্রগতি হবে বলে মনে হচ্ছে না।”
সামরিক জবাব ও পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি বার্তা
এর আগে বুধবার মস্কো এক বিবৃতিতে জানায়, রাশিয়ার অভ্যন্তরে চালানো ইউক্রেনীয় হামলার জবাবে সামরিক বিকল্প বিবেচনায় রয়েছে। একইসঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোকে এসব হামলার জন্য পরোক্ষভাবে দায়ী করা হয়।
রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে ইউক্রেনকে সংযত করার আহ্বান জানায়। অপরদিকে, ইউক্রেন দাবি করেছে—এই হামলাগুলো চলমান যুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ শক্তির প্রমাণ।
ব্রিটিশ ও মার্কিন কর্মকর্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, রাশিয়ার পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন বোমারু বিমানঘাঁটিতে হামলার বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনো পূর্বাভাস ছিল না।
ট্রাম্পের মন্তব্য ও পুতিনের প্রতি অসন্তোষ
ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেও বহুবার দাবি করেছেন, তিনি ক্ষমতায় থাকলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে দিতে পারতেন। তবে এ নিয়ে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তিনি প্রকাশ করেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ট্রাম্পের অবস্থান জোরালো হলেও রাশিয়ার সহযোগিতা না পাওয়ার কারণে তাঁর ভেতরে পুতিনের প্রতি অসন্তোষ বাড়ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
ইরান প্রসঙ্গে পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপ
ওই ফোনালাপে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েও কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বলেছি—ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারে না। এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে বলে বিশ্বাস করি।”
ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, ইরান ইচ্ছাকৃতভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া বিলম্বিত করছে। “এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আমাদের দ্রুত ও সুস্পষ্ট জবাব দরকার,” যোগ করেন তিনি।
ক্রেমলিন ও ইরানের প্রতিক্রিয়া
ক্রেমলিন জানিয়েছে, পুতিন ইতিমধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানকে আশ্বস্ত করেছেন যে, তেহরানের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা অগ্রগতি সাধনে মস্কো প্রস্তুত রয়েছে।
তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এক বক্তব্যে বলেন, “ওয়াশিংটনের প্রস্তাব আমাদের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী।”
তিনি আরও বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে এখনো গভীর মতপার্থক্য রয়েছে।
সার্বিক পরিস্থিতি
সব মিলিয়ে একদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে, অন্যদিকে ইরান প্রসঙ্গে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে সম্ভাব্য কৌশলগত সমঝোতার ইঙ্গিত মিলছে। তবে বাস্তবায়নের পথ এখনও জটিল ও অনিশ্চিত।
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স