28 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, জুন ১৯, ২০২৫

ট্রাম্পের দোদুল্যমান সিদ্ধান্তে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনায় নতুন মোড়

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

 

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও পুনরায় রিপাবলিকান মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান-ইসরায়েল ইস্যুতে এক সপ্তাহেই কয়েকবার অবস্থান বদলেছেন। কখনো কূটনীতির কথা, কখনো হুমকি, আবার কখনো সরাসরি হামলার ইঙ্গিত—তাঁর এই দোদুল্যমান সিদ্ধান্তে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে নিজ দল ও সমর্থকদের মধ্যেও।

বিশেষ করে ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ (MAGA) ঘাঁটির মধ্যেই দেখা দিয়েছে মতভেদ। কেউ বলছেন, ট্রাম্প যুদ্ধ চান না। আবার কেউ মনে করছেন, তিনি ‘ যুদ্ধের’ পথে হাঁটছেন।

বদলাতে থাকা অবস্থান

৪ ফেব্রুয়ারি: হোয়াইট হাউস জানায়, ট্রাম্প আবার ‘ম্যাক্সিমাম প্রেশার’ নীতিতে ফিরেছেন। ইরানকে পরমাণু পথ থেকে ফেরাতে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করা হবে। কিন্তু ট্রাম্প বলেন, “আমি শক্তি প্রয়োগ করতে চাই না।”

১৫ মে: গালফ সফরে ট্রাম্প বলেন, “ইরানের সঙ্গে ভালো চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত।” তিনি সহিংসতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

১৭ মে: দু’দিন পরই ট্রাম্প বলেন, “ইরান হুথিদের দিয়ে হামলা করাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা দরকার।”

২৮ মে: আবার সুর নরম। বলেন, “নেতানিয়াহুকে বলেছি, এখন ইরানে হামলার সময় নয়। আমরা কূটনৈতিক সমাধান খুঁজছি।”

সাম্প্রতিক হামলা ও প্রতিক্রিয়া

১৩ জুন: ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এই হামলায় জড়িত নয়, তবে ইরান যেন যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য না করে।”

১৭ জুন: ট্রাম্প বলেন, “UNCONDITIONAL SURRENDER!” ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনিকে হুমকি দেন—“সে কোথায় আছে, আমরা জানি।”

১৮ জুন: সাংবাদিকদের প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, “আমি হয়ত কিছু করব, আবার নাও করতে পারি।”

MAGA ঘাঁটির বিভক্তি

‘আমেরিকা ফার্স্ট’ মতাদর্শীরা বলছেন, ট্রাম্প যুদ্ধ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। এখন আবার মধ্যপ্রাচ্যে জড়ানো সেই প্রতিশ্রুতির বিরোধী। কিছু সমর্থক ট্রাম্পের চাপ-কূটনীতির কৌশলকে শক্তিশালী মনে করছেন।

ইরানের অবস্থান

ইরান জানিয়েছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ। খামেনি হুঁশিয়ার করে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করলে তার পরিণাম ভয়াবহ হবে।”

IEA ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, ইরান এখনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়নি, কিন্তু ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইতোমধ্যেই ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে—যা অস্ত্র তৈরির এক ধাপ আগের অবস্থান।

পেছনের ইতিহাস

২০১৮ সালে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান চুক্তি (JCPOA) থেকে সরিয়ে নেন। ২০২০ সালে কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার ঘটনায় চরম উত্তেজনা ছড়ায়। তখন থেকেই শুরু হয় অনিশ্চয়তা।

সিদ্ধান্তহীনতায় ঝুলে থাকা পরিস্থিতি

বিশ্বজুড়ে এখন বাড়ছে উত্তেজনা। আর ট্রাম্পের “আমি করতেও পারি, নাও করতে পারি”—এই ধোঁয়াশা মন্তব্য পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সময়ের চাপে তাঁকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে—কূটনীতি না কি যুদ্ধ?

বিশ্ব রাজনীতি এখন এক সংকটময় মুহূর্তে দাঁড়িয়ে। ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, পুরো বিশ্বের জন্য বড় প্রভাব ফেলবে।

সূত্র: আল জাজিরা

 

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

সহিংসতা বাড়াচ্ছে সিয়োনিজম,ফিলিস্তিনও ক্ষতিগ্রস্ত, ইরানও

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনে যে ধরনের সহিংসতা ইসরায়েল চালাচ্ছে, এখন সেটা ইরানেও শুরু হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, এর পেছনে মূল কারণ...