| Your Ads Here 100x100 |
|---|
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
বিশাল বাহিনী, বছরব্যাপী যুদ্ধের অভিজ্ঞতা—এসব দিয়েও শেষরক্ষা হয়নি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের। মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে ভেঙে পড়েছে তাঁর সেনাবাহিনী। আর এর নেপথ্যে রয়েছে একটি মোবাইল অ্যাপ, যার ফাঁদে পড়ে নিজেরাই নিজেদের সর্বনাশ ডেকে এনেছে সিরিয়ান সেনারা।
২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সিরিয়ান সেনাদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে STFD-686 নামের একটি মোবাইল অ্যাপ। নামটি সিরিয়ার ফার্স্ট লেডি আসমা আসাদের মানবিক সংস্থা Syria Trust for Development (STFD)-এর নামেই তৈরি। অ্যাপটির লোগো থেকে শুরু করে ওয়েবসাইট পর্যন্ত ছিল একেবারে আসলটির মতো। ফলে সেনারা ধরতেই পারেনি, এটি আসলে একটি স্পাই অ্যাপ।
অ্যাপে বলা হয়েছিল, সেনা অফিসারদের পরিবারের জন্য দেওয়া হবে মাসে ৪০ ডলার করে আর্থিক সহায়তা। দীর্ঘ যুদ্ধ আর মূল্যস্ফীতিতে জর্জরিত এক দেশে যেখানে সেনাদের মাসিক বেতন গড়ে ২০ ডলারের মতো, সেখানে এই সহায়তা হাতছাড়া করার সাহস করেননি কেউ। অনেকেই অ্যাপটি ইনস্টল করে দেন নিজের এবং পরিবারের বিস্তারিত তথ্য।
তবে অ্যাপটি ছিল মূলত একটি সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির প্ল্যাটফর্ম। ইনস্টল করলেই ফোনে ঢুকে পড়ত SpyMax নামের একটি স্পাইওয়্যার। সেনা সদস্যদের লোকেশন, ফোনকল, মেসেজ—সব চলে যেত হ্যাকারদের কাছে। ফলে সরকারপন্থি বাহিনীর চলাচল, ইউনিটের অবস্থান, অপারেশন পরিকল্পনা—সবই হয়ে পড়েছিল বিদ্রোহীদের হাতে খেলনার মতো।
ডিসেম্বর মাসে যখন বিদ্রোহীরা হঠাৎ করে অভিযান চালায়, দেখা যায় তারা প্রতিটি জায়গায় আগে থেকেই জানে কোথায় কতজন সেনা, কে কোন রুট দিয়ে যাচ্ছে। পেছন থেকে একের পর এক অ্যাম্বুশে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হয় সরকারি বাহিনীকে। এক বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয় সামরিক কাঠামোতে।
সিরিয়ান ইনভেস্টিগেটিভ সাংবাদিক কামাল শাহীনের প্রতিবেদন বলছে, বাশার আল-আসাদের পতনের অন্যতম কারণই এই অ্যাপভিত্তিক তথ্য ফাঁস। তাঁর ভাষায়, “তথ্য যুদ্ধে হার মানল কামানের গর্জন।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাইবার নিরাপত্তা ছাড়া আধুনিক যুদ্ধে টিকে থাকা সম্ভব নয়। যে বাহিনী নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবে না, সে যত বড় হোক না কেন, ধ্বংস অবধারিত।
