Your Ads Here 100x100 |
---|
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ওয়াশিংটন, ২১ জুন (রয়টার্স) – মার্কিন বিমান বাহিনীর অত্যাধুনিক B-2 স্পিরিট স্টেলথ বোমারু বিমান শনিবার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে সফল হামলায় অংশ নিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক কেন্দ্রকে আঘাত করা হয়েছে এবং তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচির মূল কেন্দ্রীয় স্থাপনা ফোর্ডো সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে।
B-2 স্পিরিট হল বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে উন্নত এবং গোপনীয়তার সঙ্গে হামলা চালাতে সক্ষম স্ট্র্যাটেজিক বোমারু বিমান। এটি কঠোর বায়ুবাহিনী প্রতিরক্ষা সিস্টেম ভেদ করে নির্ভুলভাবে স্থির লক্ষ্যে আঘাত করার সক্ষমতা রাখে, বিশেষত ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রগুলোর মতো সুরক্ষিত এলাকায়।
প্রতিটি B-2 বিমানের মূল্য প্রায় ২.১ বিলিয়ন ডলার, যা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সামরিক বিমান হিসেবে তৈরি করেছে। নর্থ্রপ গ্রুম্যান কোম্পানি এটি উৎপাদন করেছে। এটি ৬,০০০ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ১১,১১২ কিলোমিটার) দূরত্বে তেল ভরাট ছাড়াই বিমান চালাতে সক্ষম, যা গ্লোবাল স্ট্রাইক ক্ষমতা প্রদান করে।
B-2 বিমানের অস্ত্রধারী ক্ষমতা ৪০,০০০ পাউন্ডের বেশি, যার মধ্যে রয়েছে স্টেলথ বজায় রেখে বহনযোগ্য বড় মাপের অস্ত্র, যেমন GBU-57A/B MOP (ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনেট্রেটর) নামে একটি ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের বাংকার-বুস্টার বোমা। সূত্রে জানা গেছে, ফোর্ডো স্থাপনায় ছয়টি বাংকার-বুস্টার বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে।
এই বোমাটি বিশেষভাবে ভূগর্ভস্থ ও শক্তিশালী বাংকার ধ্বংসের জন্য তৈরি। GPS-নিয়ন্ত্রিত ও প্রিসিশন গাইডেড এই বোমার দৈর্ঘ্য ২০.৫ ফুট এবং এটি ২০০ ফুটেরও বেশি শক্তিশালী কংক্রিট স্তর পেরিয়ে আঘাত করতে সক্ষম।
B-2 বিমানের আধুনিক স্টেলথ প্রযুক্তির জন্য এটি শত্রুর রাডারে প্রায় অদৃশ্য, যার রাডার ক্রস-সেকশন একটি ছোট পাখির সমান। দুইজন পাইলটের ক্রু কাঠামো এবং উন্নত স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা বিমানের অপারেশন দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
অতিরিক্ত অস্ত্র হিসেবে B-2 জয়েন্ট ডাইরেক্ট অ্যাটাক মিউনিশনস (JDAM), জয়েন্ট স্ট্যান্ডঅফ ওয়েপন্স (JSOW) এবং জয়েন্ট এয়ার-টু-সারফেস স্ট্যান্ডঅফ মিসাইল (JASSM) বহন করতে পারে, যা গোপনীয়তা বজায় রেখে দূর থেকে নির্ভুল হামলা চালাতে সক্ষম।
এছাড়াও, B-2 আমেরিকার পারমাণবিক ত্রিত্বের একটি প্রধান অংশ হিসেবে সর্বোচ্চ ১৬টি B83 পারমাণবিক বোমা বহন করতে সক্ষম।
এই হামলা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উত্তেজনার নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারে, যেখানে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সূত্র: রয়টার্স