ইরান হামলার সিদ্ধান্তে ট্রাম্পের আইনগত ক্ষমতা কতটুকু?

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

গত সপ্তাহান্তে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালানো হয়। এ সিদ্ধান্তকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান দলের অনেক সদস্যই হামলার আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

কংগ্রেসম্যান থমাস ম্যাসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ বলেছেন, ‘এই হামলা সংবিধান অনুযায়ী বৈধ নয়’। অন্য রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ওয়ারেন ডেভিডসনও এটিকে ‘সাংবিধানিকভাবে অগ্রহণযোগ্য’ বলছেন। তবে রিপাবলিকান স্পিকার মাইক জনসন দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জরুরি পরিস্থিতির কারণে কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এর আগে বহু প্রেসিডেন্ট এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন।

মার্কিন সংবিধানের আর্টিকেল-১ অনুযায়ী, যুদ্ধ ঘোষণা করার একমাত্র ক্ষমতা কংগ্রেসের। কিন্তু আর্টিকেল-২ অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে জরুরি পরিস্থিতিতে সামরিক অভিযান চালাতে পারেন। হোয়াইট হাউসের মতে, ট্রাম্প এই দ্বিতীয় ধারার অধীনে হামলা চালিয়েছেন।

সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতামত ভিন্ন। পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্লেয়ার ফিনকেলস্টাইন বলেন, ‘সংক্ষেপে বলতে গেলে, প্রেসিডেন্টের কিছু ক্ষেত্রে কংগ্রেস ছাড়াই সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার আছে।’ অন্যদিকে, বোডুইন কলেজের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু রুডালেভিজ মনে করেন, ‘যেহেতু হঠাৎ কোনো আক্রমণ ছিল না, ট্রাম্পের আইনি অধিকার ছিল না।’

ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, ইরানে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ করাই জাতীয় স্বার্থের বিষয়, তাই হামলা বৈধ। তবে, ১৯৭৩ সালের ‘ওয়ার পাওয়ার্স রেজোলিউশন’ অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট জরুরি পরিস্থিতিতে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারলেও, যতটা সম্ভব যুদ্ধ বা সংঘর্ষের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে পরামর্শ করতে বাধ্য।

অবশেষে, হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, হামলার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কংগ্রেসকে জানানো হয়েছে এবং ওয়ার পাওয়ার্স রেজোলিউশন অনুযায়ী নিয়মকানুন অনুসরণ করা হয়েছে।