Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্ক :
কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির মুখে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে চট্টগ্রামে থাকা দেশের সবচেয়ে বড় শুল্ক পয়েন্টে। এটির প্রভাবে ব্যহত হচ্ছে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রমও। গতকাল শনিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি আজ রোববারও চলছে। দ্বিতীয় দিনের এ কর্মসূচির কারণে বন্দর থেকে পণ্য খালাস কার্যক্রমে বাধা তৈরি হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশ করতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে পণ্যবাহী ট্রাক। রপ্তানী পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা। বন্দরের জেটির ভেতরেও পণ্য বোঝাইয়ের অপেক্ষায় জট তৈরি হয়েছে গাড়ির। আগে নিবন্ধন না হওয়া জাহাজ থেকে বন্দরে কনটেইনার ওঠানো-নামানো কার্যক্রম চালু রাখতে গিয়েও বেগ পেতে হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষকে।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলি বলেন, ‘আমদানি-রপ্তানির শুল্কায়ন থেকে খালাস পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সব কার্যক্রম কাস্টমসের অনুমোদনে হয়। কাস্টমসের অনুমোদন ছাড়া এসব কার্যক্রমের কোনোটি হয় না। ফলে কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ হলে বন্দরের কার্যক্রমেও তার প্রভাব পড়ে। টানা দুই দিনের কর্মসূচিতে তাই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে বন্দর ও কাস্টমসে।’
বন্দরের চিফ পার্সোনাল অফিসার নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বন্দর জেটিতে জাহাজ থেকে পণ্য উঠা-নামার কাজ এখনো স্বাভাবিক আছে। তবে খালাস প্রক্রিয়ার সেসব পয়েন্টে কাস্টমস যুক্ত আছে সেখানে কিছুটা প্রভাব পড়ছে। পণ্যের জট তৈরি হচ্ছে ইয়ার্ডে।’
শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, আগের অনুমোদন থাকায় জেটিতে জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর কাজ চলছে। তবে যেসব জাহাজ এখন নিবন্ধন হয়নি, সেগুলোতে কনটেইনার ওঠানো-নামানো করা যাবে না। রপ্তানি শুল্কায়ন না হলে সেখানেও প্রভাব পড়বে। দ্রুত এই কর্মসূচির ইস্যুটি নিস্পত্তি করা দরকারের সরকারের। অন্যথায় আমদানি-রপ্তানিতে ভয়াবহ সংকট তৈরি করবে।
রাজস্ব খাতের সংস্কার ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে গতকাল শনিবার থেকে সারা দেশের শুল্ক–কর কার্যালয়ে শাটডাউন কর্মসূচি শুরু হয়। এতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে চট্টগ্রাম বন্দরে। কারণ, আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ৯২ ভাগ এই বন্দর দিয়ে আনা-নেওয়া হয়।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ গতকাল দুপুরে ঘোষণা দিয়েছে, আজও ‘শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি চলবে। আন্দোলনকারীরা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী।
গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিভক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর পর থেকে এনবিআর বিলুপ্তি রোধসহ কয়েকটি দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করছেন। গত ২৫ মে অর্থ মন্ত্রণালয় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশটি সংশোধন করার আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। এর পর ২২ জুন থেকে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গতকাল সারাদেশে এনবিআরের কর, মূসক ও শুল্ক দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কমপ্লিট শাটডাউন এবং মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি পালন করেন।