Your Ads Here 100x100 |
---|
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সিরিয়ার উপকূলীয় শহর লাটাকিয়া ও এর আশপাশের এলাকায় সম্প্রতি সংঘটিত ভয়াবহ সহিংসতায় নিহত হয়েছেন প্রায় ১,৪৭৯ জন আলাউইত মুসলিম, নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। রয়টার্সের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এই সহিংসতায় অংশ নিয়েছিল পাঁচটি প্রধান গোষ্ঠী, যাদের মধ্যে রয়েছে কুখ্যাত ইসলামপন্থী মিলিশিয়া, বিদেশি যোদ্ধা, তুরস্ক-সমর্থিত বাহিনী এবং সুন্নি বেসামরিক প্রতিশোধকারীরা।
প্রধান অভিযুক্ত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রয়েছে হায়াত তাহরির আল-শাম (HTS)-এর ইউনিট ৪০০ এবং এর ‘জেনারেল সিকিউরিটি সার্ভিস’। এই গোষ্ঠীটি ১০টির বেশি স্থানে হত্যাকাণ্ড চালায়, যেখানে প্রায় ৯০০ জন প্রাণ হারায়। পূর্বে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট এই গোষ্ঠীটি বর্তমানে সিরিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অধীনে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এদের বিরুদ্ধে আগেও লাটাকিয়ায় গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে।
তুরস্ক-সমর্থিত সুলতান সুলেমান শাহ ব্রিগেড ও হামজা ডিভিশনও এই সহিংসতায় বড় ভূমিকা রাখে। এদের বিরুদ্ধে লুটপাট, নারী নির্যাতন, বন্দি করে রাখার মতো অপরাধে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ এনেছে। এই দুই বাহিনী অন্তত আটটি জায়গায় প্রায় ৭০০ জনকে হত্যা করে।
এছাড়া জায়িশ আল-ইসলাম, জায়িশ আল-আরার ও জায়িশ আল-ইজ্জা নামক সুন্নি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর ভূমিকা ছিল ভয়াবহ। এই গোষ্ঠীগুলোর হাতে অন্তত ৪টি স্থানে ৩৫০ জন আলাউই নাগরিক নিহত হন। এদের বিরুদ্ধে আগেও মানবঢাল হিসেবে আলাউই নারী-পুরুষকে ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে।
বিদেশি যোদ্ধারাও এ সহিংসতা থেকে পিছিয়ে ছিল না। তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি, উজবেক, চেচেন ও আরব যোদ্ধাদের একটি জোট অন্তত ছয়টি স্থানে হামলা চালায়, যাতে প্রাণ হারান প্রায় ৫০০ জন।
সবশেষে, সুন্নি বেসামরিক লোকজন প্রতিশোধের নেশায় আলাউই সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি ও গ্রামে হামলা চালায়। আরজা ও বানিয়াস শহরে এই ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহতা সবচেয়ে বেশি ছিল, যেখানে মোট ৩০০ জনেরও বেশি নিহত হন।
এই ঘটনাগুলোর পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সাম্প্রদায়িক বিভাজন, গৃহযুদ্ধের প্রতিশোধ ও আলাউইত সম্প্রদায়ের ওপর গণঅসন্তোষ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের গণহত্যা শুধু সিরিয়ার জন্য নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ও সহাবস্থানের জন্যও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স