Your Ads Here 100x100 |
---|
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি নতুন করে উত্তেজনায় বিচলিত। প্রকাশ্যে ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানানো হলেও, গোপনে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করার অভিযোগে সৌদি আরব চরম সমালোচনার মুখে পড়েছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইসরাইল হাইওমের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে সৌদি আরব গোপনে ইসরায়েলের সহায়তা করেছে।
রিপোর্টে জানা গেছে, সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের সংঘাতের সময় সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ না নেওয়া সত্ত্বেও সৌদি আরব ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে রিয়াদ জর্ডান ও ইরাকের আকাশসীমায় হেলিকপ্টার মোতায়েন করে, যা ইরান থেকে ছোড়া বিস্ফোরক বোঝাই ড্রোনগুলো ধ্বংসে ব্যবহার হয়। তবে সৌদি সরকার এখনও এই বিষয় নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।
তেলআবিবভিত্তিক ওই সংবাদমাধ্যমের দাবি, আঞ্চলিক আকাশসীমার নিরাপত্তার নামে এই সহযোগিতা প্রকৃতপক্ষে ইসরায়েলি বিমান প্রতিরক্ষা কৌশলের অংশ। সৌদি আরবের বিমান বাহিনী প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া যুদ্ধবিমান ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েলকে সরাসরি সমর্থন দিয়ে আসছে।
যদিও সৌদি আরব প্রকাশ্যে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরোধিতা করে আসছে। ইরানের ভূখণ্ডে কোনো হামলা হলে রিয়াদ তা নিষিদ্ধ করেছে এবং স্পষ্ট করেছে তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করে ইরানে হামলা চালাতে দেওয়া হবে না। কিন্তু গোপনে ঠিক তার উল্টো কাজ করছে বলেই অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, ইরান জর্ডানকেও ইসরায়েলের সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করেছে। তারা বলছে, তেহরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন জর্ডান ও ইরাকের সহায়তায় মাঝপথেই ধ্বংস করা হয়েছে। তবে এই দেশগুলো এখনো সরাসরি ইসরায়েলের পক্ষে থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনা সৌদি আরবের আঞ্চলিক নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে তাদের নিরবতা ও দুর্বল অবস্থান বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হচ্ছে। গাজার মানবিক সংকটেও সৌদি আরবের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব দেখাচ্ছে তাদের দ্বিমুখী কূটনীতির ছবি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২১ মাসে ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, বেশিরভাগ নারী ও শিশু। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক লাখ ত্রিশ হাজার। এত বড় সংকটের মধ্যে সৌদি আরবের নীরবতা এবং গোপনে ইসরায়েলকে সহযোগিতার অভিযোগ তাদের আঞ্চলিক ভাবমূর্তিতে বড় আঘাত।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সৌদি আরবের এই দ্বিচারিতা তাদের ভবিষ্যৎ কূটনীতিতে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। মুখে নিন্দা, অন্তরে সহযোগিতা—এর ফলে আঞ্চলিক রাজনীতিতে তাদের অবস্থান দুর্বল হতে পারে।