Your Ads Here 100x100 |
---|
বলিউড তারকা সাইফ আলী খানের উপর হামলার ঘটনায় আকাশ কৈলাশ কানোজিয়া নামের এক ব্যক্তিকে ভুল করে আটকের পর ছেড়ে দেওয়া হলেও তছনছ হয়েছে তার জীবন।
ইন্ডিয়া টুডে লিখেছে, মুম্বাই পুলিশ এই মামলায় কৈলাশকে ভুল করে আটক করেছিল। জেরা ও তদন্তের পরে তাকে মুক্তি দেওয়া হলেও ওই ঘটনার জেরে কৈলাশ চাকরি হারিয়েছেন এবং তার বিয়েও ভেঙে গেছে।
৩১ বছরের কৈলাশ মুম্বইয়ে একটি ভ্রমণ সংস্থার গাড়ি চালক ছিলেন।
কৈলাশ জানিয়েছেন, গত ১৭ জানুয়ারি তিনি জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে চেপে ছত্তিশগড়ের তার পৈতৃকবাড়ি নেহলায় যাচ্ছিলেন এক অসুস্থ আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে। ওই অসুস্থ আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করার পর কৈলাশের হবু কনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল।
পরদিন ১৮ জানুয়ারি সকাল ১০টা নাগাদ জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্গ জংশনে পৌঁছালে হামলাকারী সন্দেহে আরপিএফ কর্মীরা (রেলওয়ে প্রটেকশন ফোর্স) তাকে আটক করে রায়পুরে নিয়ে যান বলে কৈলাশের ভাষ্য।
কৈলাশ বলেন, “আমাকে আটক করার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর মুম্বাই পুলিশের একটি দল পৌঁছায়। পুলিশ আমাকে বলে যে তদন্তের জন্য পরের দিন আমাকে মুম্বাইয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।”
“আটকের পর কোনো তথ্য যাচাই না করে সংবাদমাধ্যমের কাছে আমার নাম পরিচয় জানিয়ে দেয়। ফলে মুহূর্তের মধ্যে আমার ছবি ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় হেনস্থা। আমি বারবার বলেছি সাইফ আলী খানের হামলার সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই এবং আমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে বলি পুলিশকে। দীর্ঘক্ষণ পর পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেলেও আমার জীবনের অনেক কিছু হারিয়ে যায়।”
এ ঘটনায় কৈলাশের কেবল চাকরি গেছে তাই নয়, পরিবারের সদস্যদের রোষানলেও তিনি পড়েছিলেন বলে ভাষ্য তার। এছাড়া পাত্রী পক্ষও এক কথায় সম্বন্ধ ভেঙে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কৈলাশ।
তার ভাষ্য, “আমি আমার কোম্পানিতে ফোন করি। আমাকে বলা হয়, যেহেতু আমি আইনি ঝামেলায় জড়িয়েছি, তারা আমাকে কাজে রেখে কোনো সমস্যায় পড়তে চায় না। আমি বোঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু আমার কথা অফিস শুনতে চায়নি।
আমি মাকে যখন ফোন করি, উনি খুব চিন্তিত ছিলেন। কারণ টেলিভিশেন বারবার আমার ছবি দেখানো হচ্ছিল। একমাত্র মা আমাকে দ্রুত বাড়ি ফিরতে বলেন।
আকাশ বলেন, “ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ধরা পড়া ছেলেটির দাড়ি গোঁফ নেই। অথচ আমার গোঁফ রয়েছে। পুলিশ সেটা দেখতেই পেল না!”
কৈলাশকে পুলিশ ছেড়ে দেয় ১৯ জানুয়ারি সকালে।
আদালত তাকে যেন সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়, সেই আশা করছেন কৈলাশ। এছাড়া সাইফের হামলাকারী হিসেবে তার ছবি ইন্টারনেট থেকে মুছে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতেও পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে সাইফের ওপর হামলার ঘটনায় আটক বাংলাদেশের শরিফুল ইসলাম শেহজাদকেই এই ঘটনায় অভিযুক্ত বলে ধরে নিয়েছে পুলিশ।
কদিন আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সাইফ ও কারিনা কাপুরের বাড়ি থেকে হামলাকারীর যে ১৯টি ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাওয়া গেছে, পুলিশের পরীক্ষায় সেগুলোর সঙ্গে শেহজাদের আঙুলের ছাপের ‘কোনো মিল পাওয়া যায়নি’ বলে জানিয়েছে মহারাষ্ট্র সিআইডির ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞরা।
তবে আঙুলের ছাপ না মেলার বিষয়টি অস্বীকার করেছে মুম্বাই পুলিশ।
বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনে মঙ্গলবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মুম্বাই পশ্চিম অ্যাডিশনাল কমিশনার অব পুলিশ পরমজিত সিং দহিয়া আঙুলের ছাপ না মেলার খবরের দায় গণমাধ্যমের ওপর চাপিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আঙুলে ছাপ নিয়ে কিছু সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। ঘটনাস্থল থেকে যেসব ফিঙ্গার প্রিন্ট পুলিশ উদ্ধার করেছে, তার আনুষ্ঠানিক রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি।”
এছাড়া সাইফের বাড়ির ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় ধরা পড়া ব্যক্তিই শেহজাদ কী না সেটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শেহজাদের বাবা রুহুল আমিন ফকির বলেছেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি তার ছেলে শেহজাদ। তবে সিসিটিভির ভিডিওতে যাকে দেখা গেছে, সেই ছেলে অন্য কেউ, তার ছেলে নন।