- Advertisement -
Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্ক :
আমেরিকার সবচেয়ে লম্বা প্রেসিডেন্ট হোক কিংবা আমেরিকার প্রথম দাড়ি ওয়ালা প্রেসিডেন্ট যাই বলি না কেন সব রেকর্ড ই একজনের দখলে আর তিনি হলেন আব্রাহাম লিংকন। তিনি আমেরিকার ১৬ তম প্রেসিডেন্ট যিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং মর্যাদা সম্পন্ন একজন প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং আমেরিকায় দাসদের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, এই তথ্য গুলো কম বেশি সবারই জানা। কিন্তু এর বাইরেও এই মহারথীর জীবনের আরও অনেক দিক রয়েছে যা আমাদের অনেকেরই অজানা। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক এই ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের জীবনের জানা অজানা অনেক ঘটনা।
কেন্টাকি রাজ্যের হার্ডিন কাউন্টির দক্ষিণ পূর্বে কাঠের তৈরি এক কক্ষ বিশিষ্ট বাড়িতে জন্ম হয় বিশ্ববরেণ্য আব্রাহাম লিংকনের। তিনিই আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম অংশে জন্ম গ্রহণ করেছেন।
লিংকনের বাবা থমাস লিংকন এবং মা ন্যান্সি হ্যাঙ্কস পেশায় কৃষক ছিলেন। ১৮১৮ সালে লিংকন এর বয়স যখন মাত্র ৯ বছর তখন তাঁর মা এক অদ্ভুত দুগ্ধজাত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে পুরো দক্ষিণ ইন্ডিয়ানায় খবর ছড়ায়। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায় যে তাঁর মা যে গাভীর দুধ পান করেছিলেন সেই গাভী টি বিষাক্ত কোন ঘাস বা গাছ খেয়েছিল যার ফলে সেটার দুধেও বিষ ছিল এবং এই দুধ পানেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর মায়ের। মায়ের মৃত্যুর পর সৎ মায়ের আগমন ঘটে তাঁর জীবনে। কিন্তু গতানুগতিক পরিবারের মত সৎ মায়ের সাথে খারাপ সম্পর্ক ছিলনা লিংকনের, বরং সম্পর্ক টা বেশ ভালই ছিল। লিংকনের পড়াশুনার ব্যাপারে তাঁর সৎ মা অনেক সমর্থন করতেন, আর লিংকনও তাকে ‘সৎ মা’ কিংবা তাঁর নাম ‘সারা’ বলে না ডেকে তাকে ‘মা’ বলেই সম্বোধন করতেন। তবে বাবার সাথে তাঁর সম্পর্ক ভাল ছিলনা যার কারণে বাবার শেষকৃত্যানুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন না তিনি।
কেমন ছিল তাঁর শিক্ষাজীবন?
লিংকন ছিলেন একজন স্বশিক্ষিত ব্যক্তি, জীবনের বেশির ভাগ সময়ই তিনি নিজে নিজেই পড়াশুনা করেছেন। সব মিলিয়ে তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সময়কাল মাত্র ১৮ মাস। তিনি পড়তে খুব ভালবাসতেন এবং তাঁর যা যা জানা দরকার বলে তিনি মনে করেছেন তা নিজে নিজেই পড়ে নিয়েছেন। যেমন যখন তাঁর মনে হয়েছে তিনি উকিল হবেন তখন তিনি নিজে নিজেই উকালতির পড়া পড়েছেন। এমন কি আইন বিষয়ে কোন ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও তিনি উকালতি করেছেন। ১৮৪৯ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টে একটি কেস লড়েন এবং তাতে হেরে যান।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথের যাত্রা:
১৮৪৭-১৮৪৯ সাল পর্যন্ত মার্কিন হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ১৮৫৮ সালে তিনি মার্কিন সিনেট নির্বাচনে মার্কিন রিপাবলিকান দলে যোগ দিয়ে স্টিফেন ডগ্লাসের বিপক্ষে প্রার্থী হন কিন্তু নির্বাচন হেরে যান। এই সময় ‘লিংকন ডগ্লাস বিতর্ক’ এবং কৃতদাস প্রথা সম্পর্কে ক্যানসাস-নেব্রাস্কা আইনের উপর বিতর্ক অল্পদিনের মধ্যেই লিংকন কে জাতীয় খ্যাতি এনে দেয়। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের অল্প কিছুদিন পরই গৃহ যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় আমেরিকায়। ১৮৬১ সালের ১ জানুয়ারি স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রে সই করার মধ্য দিয়ে লিংকন যুক্তরাষ্ট্রে দাস প্রথা বিলুপ্ত করেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি প্রায় ৩৫ লক্ষ ক্রীতদাস কে মুক্ত করতে সক্ষম হন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসার আগে আরও বেশ কিছু পেশায় নিয়োজিত ছিলেন তিনি। উদাহরণস্বরূপ, ১৮৩২ সালে ব্ল্যাক হক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন, ইলিনয়ের আইন প্রণেতা হিসেবে নির্বাচন করে হেরে গিয়ে তিনি ইলিনয়ের নিউ সালেম এর পোস্ট মাস্টার হিসেবে যোগদান করেন ১৮৩৩ সালে এবং ১৮৩৬ সালে ঐ পোস্ট অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি ঐ অফিসে চাকরি করেন। প্রাদেশিক আইন প্রণেতা হিসেবে নির্বাচন করার পর তিনি উকালতি করার সিদ্ধান্ত নেন এবং বার কাউন্সিলে ভর্তি হয়ে ১৮৩৭ সালে একজন সফল উকিল হিসেবে পেশা জীবন শুরু করেন।
ধর্মবিশ্বাস: