Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্ক :
ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান অনাকাঙ্ক্ষিত আকস্মিক দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় বিদ্যালয়টির কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামসহ কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং ১৭১ জন আহত হয়েছেন। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট বিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে ঢাকার কুর্মিটোলার বিমানবাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয়। দুর্ঘটনা মোকাবিলায় এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে যুদ্ধবিমানটিকে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ১টা ১৮ মিনিটে, অর্থাৎ উড্ডয়নের ১২ মিনিট পর যুদ্ধবিমানটি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা একটি ভবনে আছড়ে পড়ে।
আহত সবাইকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারসহ অ্যাম্বুলেন্সের সহায়তায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এবং নিকটস্থ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্থানান্তর করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনের জন্য ইতোমধ্যে বিমানবাহিনীর একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ছয় মাস আগে সংসার শুরু
মাত্র ছয় মাস আগে স্বপ্নের সংসার শুরু করেছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর ও আকসা হোসেন নিঝুম। অনাকাঙ্ক্ষিত আকস্মিক দুর্ঘটনায় নিঝুমের জীবন থেকে চিরতরে হারিয়ে গেলেন তাঁর স্বামী।
তৌকিরের মৃত্যুতে তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে চলছে এখন শোকের মাতম। তবে ২৫ বছর ধরে রাজশাহীতে থাকত তাঁর পরিবার। রাজশাহীর গভ. ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের পরিচিত মুখ তৌকির বিদ্যালয়টিতে পড়েছেন ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত। এরপর ২০১০ সালে পাবনা ক্যাডেট কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন তিনি। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগ দেন তৌকির। গড়ে ওঠেন একজন দক্ষ পাইলট হিসেবে। তাঁর স্ত্রী নিঝুম ঢাকার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম ব্যবসায়ী এবং মা সালেহা খাতুন গৃহিণী। তাঁর একমাত্র বোন তাসনিয়া ইসলাম সৃষ্টি রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। বোনের পড়াশোনার জন্য তারা রাজশাহীর উপশহরে একটি বাসায় থাকতেন। তৌকির স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন।
গতকাল দুপুর থেকে রাজশাহীর উপশহরের ৩ নম্বর সেক্টরে তৌকিরের বাসায় স্বজনের আহাজারি আর কান্নার রোল ছড়িয়ে পড়ে। বিকেল ৫টার দিকে বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানে তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম, মা সালেহা খাতুন, বোন তাসনিয়া ইসলাম সৃষ্টি, বোনের স্বামী এবং মামাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।