29 C
Dhaka
রবিবার, জুলাই ২৭, ২০২৫

নান্দাইল পুলিশের তৎপরতা এবং একটি ‘মিসটেক’

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
খবরের দেশ ডেস্কঃ

জমি নিয়ে মারামারির মামলায় গভীর রাতে এক গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করে তাঁর ছয় মাস বয়সী যমজ শিশুসহ থানায় নিয়ে যায় নান্দাইল থানার পুলিশ। পরদিন শিশু দুটিসহ ওই নারীর ছবি থানার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করা হয়। এ ছবি ব্যবহার করে বাদীপক্ষও নানা কুৎসা ছড়ায়। পুলিশের এমন তৎপরতায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ওই নারী। থানার ওসি বলছেন, এটা একটা মিসটেক (ভুল) হয়ে গেছে।

নান্দাইল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিমি দূরের চন্ডীপাশা ইউনিয়নের নিজ বানাইল গ্রামে ঘটনাটি ঘটে গত ৯ জুলাই। সম্প্রতি ওই ছবি ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। গতকাল শনিবার ওই গ্রামে গিয়ে কথা হয় গৃহবধূর সঙ্গে। গোটা ঘটনায় লজ্জা অপমানে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি।

এ গৃহবধূ বলেন, জমি নিয়ে মারামারির সময় ঘটনাস্থলে তিনি ছিলেন না। তবু তাঁকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে দুই অবুঝ শিশুসহ তাঁর ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে। এর পর পোস্ট দিয়েছে বাদীপক্ষ। এতে তাঁর মানসম্মান শেষ হয়ে গেছে। ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি, পাড়া প্রতিবেশীসহ আত্মীয়-স্বজনের সামনে যেতেও লজ্জা লাগছে। তিনি বলেন, ছবিটা ফেসবুকে না দিলে কী এমন হতো। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এর বিচার কে করবে?

জমি নিয়ে বিরোধ থেকে মারামারির জেরে গ্রামের জিয়াউর রহমান তাঁর ভাতিজা ও তাঁর স্ত্রীর নামে আদালতে মামলাটি করেছিলেন। মামলায় প্রথমবার আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিন পান গৃহবধূ। কিন্তু শিশু দুটি অসুস্থ থাকায় দ্বিতীয়বার হাজিরা দিতে পারেননি। এতে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। এর পরই থানার এসআই আসাদ ৯ জুলাই গভীর রাতে গিয়ে ওই গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করে তাঁর যমজ শিশুসহ থানায় নিয়ে যান। পরদিন থানার ফেসবুক আইডিতে অন্য আসামিদের সঙ্গে দুই শিশুসহ ওই নারীর ছবি পোস্ট দেওয়া হয়। এ আইডিতে থানার দৈনন্দিন পারফরম্যান্স তুলে ধরা হয়।

ওই গৃহবধূ বলেন, পুলিশ গভীর রাতে তাঁকে থানায় নিয়ে যেতে চাইলে তিনি তাঁর ঘুমন্ত দুই শিশুসন্তানের কথা জানিয়ে সকালে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তা তাতে কর্ণপাত করেননি। থানায় নিয়ে সারারাত হাজতখানায় রেখে পরদিন আদালতে পাঠানো হয় তাঁকে। সেখান থেকে তিনি পুনরায় জামিন পান। কিন্তু এরই মধ্যে ফেসবুকে তাঁর ছবিসহ পোস্ট দেয় থানা কর্তৃপক্ষ।

গৃহবধূর স্বামী জানান, প্রতিপক্ষ একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে নানাভাবে তাদের হয়রানি করে যাচ্ছে। তিনি তাঁর স্ত্রীর সম্মানহানির বিচার দাবি করেন। জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান ফকির বলেন, গভীর রাতে বাড়িতে গিয়ে আসামি ধরার কোনো বিধান নেই। তাছাড়া নারীসহ শিশুদের থানায় এনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সরাসরি ছবি দিয়ে পোস্ট দেওয়াটাও পুলিশের উচিত হয়নি।

নান্দাইল মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, এটা একটা মিসটেক (ভুল) হয়ে গেছে। এখন থেকে গ্রেপ্তার করা আসামিদের ছবি দিয়ে পোস্ট করার সময় আরও সতর্ক হতে হবে।

গৌরীপুর সার্কেলের এএসপি দেবাশীষ কর্মকার সমকালকে বলেন, নারী-শিশুদের ছবি পোস্ট করতে হলে চেহারা ব্লার (ঝাপসা) করে দেওয়ার কথা আগেই বলা হয়েছিল। এর পরও তা মানা হয়নি। ওই গৃহবধূর ছবি যে পোস্ট করেছে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

সুখবর দিলেন শাবনূর

বিনোদন ডেস্কঃ ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর দীর্ঘদিন ধরেই পরিবার নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। মাঝে মাঝে দেশে আসলেও...