26.3 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, জুলাই ৩১, ২০২৫

‘এমন একটা ছাদ বানিয়ে দিবেন, যে কোনো জায়গা থেকে যেনো চাঁদ দেখা যায়’

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
বিনোদন ডেস্কঃ

আমাদের প্রিয় বন্ধু খ্যাতিমান চলচ্চিত্র সাংবাদিক আবদুর রহমান অনুরোধ করলেন নায়িকা ববিতাকে নিয়ে একটি লেখা লিখতে। আমি যেহেতু অনেকের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে অথবা স্মৃতিচারণমূলক টুকটাক লেখা লিখে থাকি; তাই তিনি আমাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বললেন, ববিতার জন্মদিনে আমার একটি লেখা না লিখলেই নয়। আমি বললাম, ববিতার সঙ্গে আমার তো তেমন কোনো স্মৃতি নেই।

ফোনে দুই চারবার কথা বলা আর কয়েকটি অনুষ্ঠানে দেখা হওয়া ছাড়া তেমন কোনো স্মৃতি মনেও পড়ে না। তাঁর সম্পর্কে অনেকে এতকিছু জানে সেই তুলনায় আমি কি অত জানি? কী লিখব তাহলে? যদিও তাঁর অমায়িক ব্যবহার, সুন্দর গোছানো বক্তৃতার কথা তো সবারই জানা। আমি পাঠককে কি নতুন তথ্য দিব? আবদুর রহমান ববিতার জন্মদিন উপলক্ষে ববিতা অভিনীত বাদী থেকে বেগম চলচ্চিত্রটির ঝকঝকে প্রিন্ট উদ্ধার করেছেন। ববিতার পর্দ অভিষেকের ৫০ বছরে চ্যানেল আইয়ের পর্দায় দেখানো হয়।

ববিতা বাংলাদেশের একজন বড় অভিনেত্রী। তাঁকে বলা হয় আন্তর্জাতিক শিল্পী। আমরা শাইখ সিরাজের একটি অনুষ্ঠানে দেখেছি, ববিতা পাখি ভালোবাসেন, ফুল ভালোবাসেন। গাছগাছালি ভালোবাসেন। গাছের পরিচর্যা করেন। তাঁর ঘরের জানালার কাছে গাছ আছে। সেই গাছে ফুল ফুটলে তিনি জানালা দিয়ে দেখতে পারেন। তিনি আনন্দিত হন এই ভেবে যে, নিজ হাতে লাগানো গাছে ফুল ফুটেছে। পাখি পালছেন।

ববিতার আবাসস্থল নির্মাণ করেছেন বিখ্যাত আর্কিটেক্ট রফিক আজম। ববিতা রফিককে বলেছিলেন, এমন একটা ছাদ বানিয়ে দিবেন যে, ছাদের যে কোনো জায়গা থেকে চাঁদ দেখা যায়। রফিক আজম সে রকমই একটা শৈল্পিক মানের বাড়ি বানিয়েছেন। ববিতার বাড়ি বা তাঁর ছাদ বাগানটি পছন্দ করেনি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ববিতার ছেলে অনিক কানাডায় থাকে, তিনি সেখানে চলে যান মাঝেমধ্যে। ববিতা যেসব সিনেমায় অভিনয় করেছেন, তার প্রায় সবগুলোই বাছাই করা। খুব চিন্তাভাবনা করে এমন সব চরিত্র চিত্রায়ণ করেছেন, যেন মানুষ সেই চরিত্রগুলো সব সময় মনে রাখে। তিনি কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে। বাংলাদেশের বিখ্যাত পরিচালক আমজাদ হোসেন, আজিজুর রহমান, চাষী নজরুল ইসলামসহ অনেকের চলচ্চিত্রে। তাঁর প্রথম ছবির নাম ছিল ‘শেষ পর্যন্ত’ এই ছবির একটি সংলাপ ছিল ‘ইস রে’। এই সংলাপটি তখন খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। এর আগে তিনি জহির রায়হানের সংসার ছবিতে সুবর্ণা নামে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়নি।

একজন শিল্পী জানেন না যে, তিনি মানুষের কাছে কতটা জনপ্রিয়। তাঁকে মানুষ কতটা শ্রদ্ধা, সম্মান, ভক্তি করে, ভালোবাসে। একজন শিল্পীর পক্ষে তো ঘরে ঘরে গিয়ে জানা সম্ভব নয়। তবে তিনি নিশ্চয়ই অনুভব করেন। এটা ববিতার বেলাতেও ঘটে। এই মুহূর্তে ববিতার সম্পর্কে বলা শাইখ সিরাজের একটি গল্প মনে পড়ে গেল– ‘মাটি ও মানুষ’-এর শুটিংয়ের কাজে একবার শাইখ সিরাজ যশোর এলাকার একেবারে প্রত্যন্ত এলাকা নওয়াপাড়ায় গিয়েছিলেন। সেখানে এক কৃষকের বাড়ির বেড়ায় ববিতার অসংখ্য ছবি দেখতে পান। সেই ছবিগুলো ছিল তৎকালীন সিনেমা পত্রিকা চিত্রালীর একটি সংখ্যা। সেই সংখ্যায় ববিতাকে নিয়ে প্রচ্ছদ ছাপা হয়েছিল। শাইখ সিরাজ কৌতূহল নিয়ে কৃষককে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ববিতার এত ছবি? কৃষক মৃদু হেসে জবাব দিলেন তিনি আমার প্রিয় নায়িকা।

যশোরের সেই কৃষকের ঘরের বেড়াগুলো যে চিত্রালীর পাতা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল কমপক্ষে সেখানে ত্রিশ বত্রিশটি চিত্রালী লেগেছিল। কৃষক আরও বললেন, আমার কাছে এই সংখ্যাটি আরও অজস্র আছে।  আমি একবার কনাকে নিয়ে নিউইয়র্কের একটি বাঙালি রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলাম। সেই রেস্টুরেন্টের এক পাশের একটি দেয়ালে দেখলাম, শুধু ববিতার ছবি দিয়ে সাজানো। আমি বিস্ময়ে সেই ছবিগুলি দেখছিলাম।

আমি জিজ্ঞেস করলাম, এই দেয়ালটি ববিতার ছবি দিয়ে সাজানো কেন? রেস্টুরেন্টের মালিকের স্ত্রী বললেন, আমি আর আমার স্বামী দুজনই নায়িকা ববিতার ভীষণ ভক্ত। একজন ববিতা কতটুকু জনপ্রিয় হলে যশোরের কৃষকের ঘর থেকে পৃথিবীর আধুনিক শহর নিউইয়র্কেও তাঁর ভক্তের দেখা মেলে। এটা সবারই জানা, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের বাইরে অসংখ্য জায়গায় ববিতার এই ভক্তরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। যাদের ভালোবাসায়, শ্রদ্ধায় এখনও সিক্ত হন ববিতা।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

ক্যালিফোর্নিয়ায় এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে একটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। যুদ্ধবিমানটি লেমুর নেভাল এয়ার স্টেশনের কাছে ভেঙে পড়ে। তবে পাইলট...