26.5 C
Dhaka
শুক্রবার, আগস্ট ১, ২০২৫

১৩ বিষয়ে দ্বিমতসহ ঐকমত্য, ছয়টি এখনও আলোচনায়

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

খবরের দেশ ডেস্কঃ

ঐকমত্য কমিশন আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে সংলাপ শেষ করতে চাইলেও সাতটি সংস্কার সুপারিশের নিষ্পত্তি হয়নি। দ্বিমতসহ ঐকমত্য হয়েছে ১৩ সুপারিশে। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ২২তম দিনের সংলাপে সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধিতে ঐকমত্য হয়েছে বলে ঘোষণা করেছে কমিশন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব গতকালের আলোচনায় উঠলেও সিদ্ধান্ত হয়নি।

জামায়াতে ইসলামীসহ ছয়টি ধর্মভিত্তিক দল নারীদের সরাসরি নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার বিধানে একমত হয়নি। এ দলগুলো ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে। জামায়াত বলেছে, তারা নারী আসন বৃদ্ধি করে ১০০ করতে নীতিগতভাগে একমত হলেও নির্বাচন পদ্ধতিতে দ্বিমত রয়েছে।

কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, আগে যে ১২ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ৭০ অনুচ্ছেদ শিথিল, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারককে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগে বিএনপি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে একমত হয়েছে।

এক ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না– এ বিষয়ে ঐকমত্য হলেও বিএনপি জানিয়েছে, সরকারপ্রধানের ক্ষমতা কমলে তারা একমত নয়। প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকা বন্ধের সুপারিশেও বিএনপি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে। প্রথম দফার সংলাপে যে ৬২ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, গতকাল সেগুলোর তালিকা দিয়েছে কমিশন।

আলী রীয়াজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করার কথা বললেও সনদ নিয়েও মতবিরোধ তুঙ্গে। বিএনপি বাদে বাকি দলগুলো বলেছে, তাড়াহুড়ো না করে ঐকমত্যের স্বার্থে আরও কয়েক দিন আলোচনা করা উচিত।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সংলাপের পর জানিয়েছেন, সনদ বাস্তবায়নের একমাত্র জায়গা সংসদ। জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপিসহ কয়েকটি দল জানিয়েছে, সনদের আইনি ভিত্তি, নির্বাচনের আগে সংস্কার, সনদের অধীনে ভোট হতে হবে। নইলে সনদে সই করবে না।

সংলাপের বিরতিতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ কমিশন সদস্যরা। তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টাকে সংলাপের অগ্রগতি ও মতভেদ জানানো হয়েছে।

সংলাপের পর কমিশনের সহসভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যমান ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন বহাল থাকবে। জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে ন্যূনতম ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান থাকবে। পরবর্তী নির্বাচনে দলগুলো ন্যূনতম ১০ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে– এই প্রত্যাশা সংবিধানে যুক্ত হবে। ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্বের লক্ষ্য অর্জিত হলে সংরক্ষিত ৫০ আসন বাতিল হবে।

আলী রীয়াজ জানান, আজ (গতকাল) রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব বৃদ্ধির ধারণাপত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে দিয়েছি।

প্রস্তাবে রয়েছে– অ্যাটর্নি জেনারেল, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য, তথ্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য, প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য, টেলিকম নিয়ন্ত্রক কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধান এবং ডিজিএফআই ও এনএসআইর মহাপরিচালক আইনের মাধ্যমে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।

আলী রীয়াজ বলেন, যদি এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়, তাহলে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে কার্যকর করতে হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সম্পর্কিত বিষয়ে কমিশনকেই সিদ্ধান্ত দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, সনদের খসড়ায় রাজনৈতিক দলগুলো সংশোধনী ও সংযোজনী দিয়েছে।

সনদ বাস্তবায়নের একমাত্র জায়গা সংসদ
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জুলাই সনদ জাতি, জনগণ, রাজনৈতিক দলের চুক্তি। সনদ বাস্তবায়নের একমাত্র জায়গা সংসদ।’

বিএনপি কেন আইনি ভিত্তি চায় না– এ প্রশ্নে তিনি বলেন, সনদ বাস্তবায়নে আইন, সংবিধান সংশোধনে বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নেও বিএনপি একমত। এতগুলো রাজনৈতিক দল উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়েছে, সবকিছু সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে। জাতি দেখছে, কে কী বলেছে। এরপর যখন সবার স্বাক্ষরসহ সনদ চূড়ান্ত হবে, তখন কি কোনো রাজনৈতিক দল অস্বীকারের সাহস করবে?

বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ছয়টি প্রধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ছিল ৮২৬টি। এর মধ্যে মাত্র ৫১ প্রস্তাবে বিএনপি একমত হয়নি। এরপরও কেউ কেউ বলে, বিএনপি সংস্কার মানছে না।

আইনি ভিত্তি ছাড়া সনদে সই নয়
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, আইনগত ভিত্তি না থাকলে সনদ বাস্তবায়নযোগ্য হবে না। জনগণের কাছে মূল্য থাকবে না। তাতে জামায়াত সই কর‌বে না।

সংসদে সংস্কার হবে– বিএনপির অবস্থানকে অবাস্তব আখ্যা দিয়ে ডা. তাহের বলেছেন, ‘সংস্কার না হলে পুরোনো নিয়মে নির্বাচন হবে।’ সনদকে লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক, গণভোট বা সাংবিধানিক ঘোষণার মাধ্যমে আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রয়াত রাষ্ট্রপ‌তি জিয়াউর রহমান সংবিধান পরিবর্তন করেছেন আইনি কাঠামো ও গণভোটে। পরে সংসদ অনুমোদন করেছে।’

আইনগত ভিত্তি ছাড়া সনদ টিকবে না– আশঙ্কা করে ডা. তাহের বলেছেন, ‘সাংবিধানিক ঘোষণায় সনদকে ৫ আগস্ট থেক কার্যকর ধরে পরে সংসদে অনুমোদন হলে কেউ আর আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না।’

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘বজ্র আঁটুনি, ফস্কা গেরো’ এমন সনদ চাই না। দুই বছরের মধ্যে সংস্কার বাস্তবায়নের সুপারিশ প্রতারণার সুযোগ তৈরি করে।

আইনগত ভিত্তি ছাড়া সনদে সই না করার ঘোষণা দেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আলী আশরাফ আকন।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

ক্যালিফোর্নিয়ায় এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে একটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। যুদ্ধবিমানটি লেমুর নেভাল এয়ার স্টেশনের কাছে ভেঙে পড়ে। তবে পাইলট...