Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্কঃ
২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল ‘কইলজা কাঁপানো ৩৬ দিন’। এই সময়ে সংস্কৃতি অঙ্গনে অনেক কিছুই ঘটেছে। জুলাইয়ের সেইসব কিছু ঘটনা নিয়েই এই আয়োজন।
বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মী
১৯ জুলাই ‘বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মী’দের পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়। কর্মসূচির আগের দিন ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হলেও পরদিন অন্তত ২০০-৩০০ মানুষ উপস্থিত হন সেই কর্মসূচিতে। মানববন্ধনের প্রথম সারিতে ছিলেন নাট্যজন ও শিক্ষক সামিনা লুৎফা।
দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজের জোরালো উপস্থিতি
১ আগস্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রদের ৯ দফা দাবির পক্ষে এবং চলমান সহিংসতা, হত্যা ও গণগ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাজপথে নামে ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’। সেদিন মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা সংসদ ভবনের সামনে জড়ো হন। পুলিশের অনুরোধে সেখান থেকে সরে এসে দাঁড়ান ফার্মগেট এলাকায়। ব্যানার হাতে স্লোগান দেন, জানান প্রতিবাদের ভাষা। সেদিনের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা মামুনুর রশীদ, মোশাররফ করিম, ইরেশ যাকের, সিয়াম আহমেদ, আজমেরী হক বাঁধন, মোস্তফা মনোয়ার, সাবিলা নূর, রাফিয়াত রশীদ মিথিলা, নাজিয়া হক অর্ষা, শ্যামল মাওলা, নির্মাতা নুরুল আলম আতিক, আকরাম খান, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, মাতিয়া বানু শুকু, রেদওয়ান রনি, আশফাক নিপুণ, আদনান আল রাজিব, পিপলু আর খান ও সৈয়দ আহমেদ শাওকির মতো প্রখ্যাত শিল্পীরা।
রবীন্দ্রসরোবরে ‘গেট আপ, স্ট্যান্ড আপ’
৩ আগস্ট ‘গেট আপ, স্ট্যান্ড আপ’ শিরোনামে একটি ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচি আয়োজন করেন সংগীতশিল্পীরা। ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে জড়ো হয়ে তারা শহীদ মিনারের উদ্দেশে পদযাত্রা করেন। এ কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানান তারা। এই আয়োজন ছিল ব্যতিক্রমী ও জোরালো। অংশ নেন দেশের শীর্ষ ব্যান্ড ও সংগীতশিল্পীরা। তাদের মধ্যে ছিলেন– মাইলস, মাকসুদুল হক, আর্টসেল, শিরোনামহীন, চিরকুট, কুঁড়েঘর, মেকানিক্স, ক্রিপটিক ফেইথ, ওয়ারফেজ, এভয়েড রাফা, মেঘদল ও সহজিয়া ব্যান্ড। আরও ছিলেন প্রিন্স মাহমুদ, পার্থ বড়ুয়া, প্রবর রিপন, জয় শাহরিয়ার, এ কে রাহুল, খৈয়াম শানু সন্ধিসহ একাধিক সংগীতশিল্পী।
আওয়াজ উডা এবং কথা ক গানের দুই শিল্পীর বিরুদ্ধে মামলা
‘আওয়াজ উডা’ নামের র্যাপ গান ১৮ জুলাই প্রকাশিত হয় এবং গানটিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তরুণদের প্রতিবাদের সুর ফুটিয়ে তোলা হয়। এই গানটি প্রকাশের পর নারায়ণগঞ্জে শিল্পী হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে রিমান্ডে নেওয়া হয়। তাঁর মুক্তির জন্য অনেক শিল্পী হ্যাশট্যাগ #freehannan ব্যবহার করে নিজেদের ফেসবুকে পোস্ট করেন। অন্যদিকে, হান্নানের গ্রেপ্তারের পর ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জের আরেক র্যাপার মুহম্মদ শেজানের গ্রেপ্তারের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তিনিও ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে একটি র্যাপ গান প্রকাশ করেন। গানটির নাম ‘কথা ক’। এই গানটি ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে এখন অবস্থান করছে দুই নম্বরে। এই দুটি গানই সেই সময় তরুণদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
বিটিভিতে গিয়ে কান্নায় নিন্দার ঝড় ওঠে
গণঅভ্যুত্থানে বিটিভিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তারকাশিল্পীদের একাংশ। ২৪ সালের ১৮ জুলাই রাজধানীর রামপুরার বিটিভির প্রধান কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিটিভিতে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদ জানাতে ১ আগস্ট বিটিভি প্রাঙ্গণে হাজির হন সংস্কৃতি অঙ্গনের আওয়ামীপন্থি একঝাঁক তারকাশিল্পী। তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন স্লোগানসংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড।
অগ্নিকাণ্ডে বিটিভির ক্ষয়ক্ষতি দেখে তাদের অনেকে অঝোরে কেঁদেছিলেন। সেই সময় আহত ছাত্রদের পাশে না দাঁড়িয়ে বিটিভিতে তারকাদের কান্নাকাটির ঘটনায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন মহলের পাশাপাশি বিনোদন অঙ্গনেও নিন্দার ঝড় ওঠে।