চলতি বছরের জুনের তুলনায় জুলাইয়ে রাজনৈতিক সহিংসতা বেড়েছে। রাজনৈতিক সহিংসতায় ৯ জন নিহত ও ৫৯৩ জন আহত হয়েছে। যেখানে জুনে আহত হয়েছিল ৪৩০ ও নিহত আটজন।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা জুনে ছিল ৪৫টি, জুলাইয়ে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮টি। সহিংসতার ৪২টি ঘটনার মধ্যে বিএনপির অন্তর্দ্বন্দ্বে ২৭টি, বিএনপি-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ দুটি, এনসিপির অন্তর্দ্বন্দ্বে দুটি, বিএনপি-এনসিপি তিনটি, বিএনপি-পুলিশ একটি, এনসিপি-পুলিশ-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ একটি, বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষ চারটি, আওয়ামী লীগ-জামায়াতের সংঘর্ষ একটি এবং কুমিল্লায় একজন উপদেষ্টার অনুসারী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসে ৩৫২ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্য ধর্ষণের ঘটনা ৫৬টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ১৮টি, ধর্ষণ ও হত্যা সাতটি। ধর্ষণের শিকার হয়েছে পাঁচজন প্রতিবন্ধী কিশোরী ও নারী। ধর্ষণের শিকার ৫৬ জনের মধ্যে ১৭ জন শিশু, ২৪ জন কিশোরী রয়েছে। অন্যদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮ কিশোরী ও ১০ নারী এবং ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছে দুই শিশু, তিন কিশোরী ও দুজন নারী। তিন শিশু, ১৭ কিশোরী, ৩১ জন নারীসহ মোট ৫১ জন আত্মহত্যা করেছে।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা আট থেকে বেড়ে হয়েছে ৯টি। এর মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের দুটি, একটি করে হেনস্তা, প্রতিমা ভাঙচুর ও জমি দখলের ঘটনা। কটূক্তির ঘটনার অভিযোগে কিশোরকে গ্রেপ্তারসহ ১৫টি বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘেটেছে এ মাসে। অন্যদিকে, জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
জুলাই মাসে অন্তত ৫১টি মব সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ১৬ জন নিহত ও ৫৩ জন গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। গণপিটুনির শিকার ৩০ জনকে আহত অবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, জুলাইয়ে সীমান্তে ৯ জন নিহত, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে দুটি। পুলিশের হেফাজতে একজনের মৃত্যু ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে পালাতে গিয়ে একজনের মৃত্যু ও ছদ্মবেশে একজনকে তুলে নেওয়া হয়েছে।
এ সময়ে কারা হেফাজতে মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্য চারজন কয়েদি ও ছয়জন হাজতি। কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছয়, নারায়ণগঞ্জ, দিনাজপুর, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে একজন করে বন্দির মৃত্যু হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন জেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ১৯টি ঘটনায় ৩০ জন সাংবাদিক নানাভাবে হামলা, আইনি হয়রানি, হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অন্যদিকে, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে এক কিশোর।