‘তারুণ্যের প্রথম ভোট, ধানের শীষের জন্যে হোক’ এই আহবান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আজকের তরুণরাই আগামীর বাংলাদেশ। তাই ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ, চরমপন্থা ঠেকাতে শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকতে হবে। বিভেদ, প্রতিহিংসার রাজনীতি বাদ দিয়ে মানুষের জীবন মান উন্নয়নের রাজনীতি শুরু করার আহবানও জানান তিনি।
রোববার (৩ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ছাত্রদলের ‘ছাত্রসমাবেশে’ ভার্চুায়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব এ কথা বলেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এই এই সমাবেশ রূপ নেয় জনসমাবেশে। যেখানে সারাদেশ থেকে ছুটে এসেছে হাজারো নয়, লক্ষাধিক তরুণ। যাদের চোখে স্বপ্ন, হৃদয়ে মুক্তির আহবান।
নগরীর প্রতিটি সড়ক মেলে শাহবাগের জনস্রোতে। সকাল গড়িয়েছে দুপুরে, শহরের রক্তচাপ বাড়ে তরুণদের পদচারণায়।
বেলা আড়াইটায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাবেশের মূল আনুষ্ঠানিকতা। এরপর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয় জুলাই অভ্যুত্থানসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সব শহীদদের।
সমাবেশের আবেগ ছুঁয়ে যায়, যখন জায়ান্ট স্ক্রিনে বক্তব্য শুরু করেন তারেক রহমান। দূর থেকে দেওয়া বার্তায় ছিল নেতৃত্বের পাঠ, আর বাস্তবতার চোখে দেখা স্বপ্নের দিশা।
বক্তব্যের সিংহভাগই ছিলো আগামী বাংলাদেশ কেমন হবে সেটি নিয়ে বিএনপি কী ভাবছে। বিএনপির এই শীর্ষ নেতা জানান, কোন নীতিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন তারা।
আসন্ন নির্বাচনে হারানো ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে সেটি কাজে লাগানোর তাগিদ দেন তারেক রহমানের। সাবলম্বী দেশ গড়তে, ভোটের অধিকার ফেরাতে সমর্থন ও সহযোগিতাও চান তিনি।
বলেন, দেশের জনগণই বিএনপির তথা দেশের সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। কথামালার রাজনীতি নয়, আমরা জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি শুরু করি।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের শত শত নেতাকর্মী হতাহত হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের সময় শুধুমাত্র ছাত্রদলের দুই হাজার নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। যেই সংগঠনে তোমাদের মতো সাহসী মায়ের সন্তানেরা আছে, সেই সংগঠনের নেতাকর্মীদের কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।
তারেক রহমান বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হয়েছে। বাংলাদেশ এখন একটি পরিণত দেশ। এই পরিণত দেশে মানুষ বিভেদ চায় না।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিশ্বে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে কারিগরি প্রযুক্তি এবং দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে স্কুল পর্যায় থেকে কারিগরি শিক্ষা থাকবে।
শাহবাগের এই ঐতিহাসিক সমাবেশ যেমন ছিল গণতান্ত্রিক অধিকারের জোরালো উচ্চারণ, তেমনি রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও পরিণত নেতৃত্বের বার্তা। তারেক রহমানের বলেন, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এই তরুণ শক্তিই হয়ে উঠবে পরিবর্তনের অন্যতম নিয়ামক।
তারেক রহমানের বক্তব্যে সতর্কবার্তাও ছিলো স্পষ্ট। তিনি বলেন, কুচক্রী মহলের ফাঁদে না পরে আন্দোলন হবে গঠনমূলক, লক্ষ্য থাকবে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের।