27.7 C
Dhaka
সোমবার, আগস্ট ৪, ২০২৫

চাঁদাবাজির মামলায় রিয়াদের স্বীকারোক্তি, বললেন ‘চাঁদার টাকা সমান ভাগ হতো’

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
খবরের দেশ ডেস্কঃ

সাবেক এমপি শাম্মি আহম্মেদের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গুলশান থানার মামলায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বহিষ্কৃত নেতা আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহের আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এদিন রিয়াদসহ চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় রিয়াদ স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করতে আবেদন করেন।

এদিন আদালতে জবানবন্দিতে জানান, বিভিন্ন সময়ে ফ্যাসিবাদী লোকজন গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে পুলিশকে সহযোগিতা করেছেন। ঘটনার দিন ১৭ জুলাই রাতে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র সহসভাপতি জাকির হোসেন মঞ্জুর ফোনের মাধ্যমে গুলশান জোনের ডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন তিনি ডিসিকে জানান, গুলশান থানাধীন ৮৩ নম্বর রোড, বাসা নং- ১৩ তে আওয়ামী লীগের আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক এমপি শাম্মি আহমেদ নিজ বাসায় অবস্থান করছেন। পরবর্তীতে ডিসি নিজে জানান যে, বিষয়টি তিনি গুলশান থানার ওসিকে অবগত করেছেন। এরপর রাত দুইটার দিকে তিনিসহ মঞ্জু, জানে আলম অপু, সাবাব হোসেন, আতিক শাহরিয়ার, সাদাকাউম সিয়াম, তানিম ওয়াহিদ ও আতিকের সঙ্গে কয়েমজন মিলে থানায় যায়। তখন ওসি জানান, এতো রাতে গুলশান সোসাইটিতে অভিযান চালানো যাবে না এবং ফজরের আযান পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পরবর্তীতে গুলশান থানার একটি টিম তাদের সঙ্গে দেওয়া হয়।

জবানবন্দিতে রিয়াদ জানান, তিনিসহ পুলিশ সদস্যরা সাবেক এমপি শাম্মী আক্তারের বাড়িতে যায়। গুলশানের থানার ওসি (তদন্ত) নিজে অভিযানের নেতৃত্ব দেন। তবে শাম্মীকে বাসায় না পেয়ে সকাল সাড়ে ৭টায় তারা ফিরে আসেন। পরবর্তীতে জানে আলম অপু তাকে বলেন, ওই বাসা থেকে তিনি শাম্মী আক্তারের এয়ারপড নিয়ে এসেছেন। পরে রিয়াদ ও অপু ওইদিন সকাল ১০টার দিকে এয়ারপড ফেরত দিতে ওই বাসায় যান। বাসায় গিয়ে তারা এয়ারপড ফের‍ত দেন। তখন অপু পানি খাওয়ার কথা বলে ওই বাসায় প্রবেশ করেন। অপু বাসায় থাকা শাম্মীর স্বামীকে বলেন, ‘শাম্মী বাসায় আছেন। আমরা তাকে পুলিশে দিয়ে দেব।’ তখন শাম্মীর স্বামী ভয় পেয়ে তাদের টাকা অফার করেন। তখন অপু ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু এত টাকা বাসায় নেই বলে জানান শাম্মীর স্বামী। পরবর্তীতে ১০ লাখ টাকা নিয়ে চলে আসেন এবং টাকা সমান ভাগ করেন তারা।

এই মামলায় অপর তিন আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কারাগারে যাওয়া অন্যরা হলেন- মো. ইব্রাহিম হোসেন, সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব।

তারাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা ছিলেন। ঘটনার পর তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া গত ২ আগস্ট অপর আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বর্তমানে তিনি রিমান্ডে রয়েছেন।

এর আগে গত ২৭ জুলাই তাদের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই দিন আইনের সংঘাতে জড়িত শিশু মো. আমিনুল ইসলামকে গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ২৬ জুলাই রাত সাড়ে ১২টায় ভুক্তভোগী সিদ্দিক আবু জাফর বাদী হয়ে গুলশান থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন। এতে তিনি ছয়জনকে আসামি করেন। রিয়াদ ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- কাজী গৌরব অপু, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, মো. ইব্রাহিম হোসেন ও আইনের সংঘাতে জড়িত শিশু মো. আমিনুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় আসামি আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ, কাজী গৌরব অপু গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি শাম্মি আহম্মেদের বাসায় যান। তখন তারা হুমকিধমকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণাংকার দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যায়িত করে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানোর হুমকি দেন এবং টাকা চেয়ে চাপ দিতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে মামলার বাদী সিদ্দিক আবু জাফর বাধ্য হয়ে নিজের কাছে থাকা নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও ভাইয়ের কাছে থেকে নিয়ে আরো পাঁচ লাখ টাকা প্রদান করেন। এ ঘটনার পর গত ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে আসামি রিয়াদ ও অপু বাদীর বাসায় প্রবেশ করে তার ফ্ল্যাটের দরজায় ধাক্কা দেন। বিষয়টি গুলশান থানা পুলিশকে মোবাইল ফোনে অবহিত করলে আসামিরা চলে যায়। পরবর্তীতে ২৬ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টায় আসামি রিয়াদের নেতৃত্বে অপরাপর আসামিরা বাদীর বাসার সামনে এসে তাকে খুঁজতে থাকেন। বাসার দারোয়ান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে বিষয়টি জানান। তখন আসামিদের দাবি করা বাকি ৪০ লাখ টাকা না দিলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেবেন বলে হুমকি দিতে থাকেন। পরবর্তীতে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে তাৎক্ষণিক গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচ আসামিকে হাতেনাতে আটক করে এবং ওই সময় এজাহারনামীয় আসামি কাজী গৌরব অপু দৌড়ে পালিয়ে যান।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

“মেয়েকে নিয়ে বাণিজ্য চলবে না: পরীমণি”

বিনোদন ডেস্কঃ গেল বছর একটি কন্যাশিশু দত্তক নিয়েচেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। মায়ের আদর দিয়েই তাকে বড় করে তুলছেন তিনি। এক ছেলে ও...