Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্ক :
জুলাই ঘোষণাপত্রে গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট অন্তর্ভুক্ত না করলে বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ। এদিকে নির্বাচনের ঘোষণায় ১/১১ সৃষ্টির ধোঁয়াশা কেটে গেছে বলে জানিয়েছে দলটি।
আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জুলাই ঘোষণাপত্র ও নির্বাচনের রোডম্যাপের প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয় দলের পক্ষ থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।
লিখিত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের ১৬ নম্বর দফায় বলা হয়েছে, ‘সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থার বিলোপ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ইত্যাদি…’ ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ১ম ও ২য় শ্রেণির চাকরিতে বাতিল হওয়া কোটার অংশবিশেষ (৩০%) হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে ফিরে না আসলে, নতুনভাবে আন্দোলনের সূচনা হতো না। এখানে দুর্নীতি প্রতিরোধ বা অন্য কোনো দাবিতেও আন্দোলন শুরু হয়নি।
তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট কোটা সংস্কার আন্দোলন। কিন্তু এই আন্দোলনের ইতিহাস বাদ দিয়ে মিথ্যা ইতিহাসের ওপর জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা মনে করি, গণ-অধিকার পরিষদ ও ছাত্র অধিকার পরিষদের ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস বাদ দিতে পরিকল্পিতভাবে জুলাই ঘোষণাপত্রে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। ইতিহাস বিকৃতি বড়ধরনের অপরাধ।
রাশেদ খাঁন বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের ১৭ নং পয়েন্টে বলা হয়েছে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী বাহিনী রাজপথে নারী-শিশুসহ প্রায় এক হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে… কিন্তু জাতীয়সংঘ বলছে এই সংখ্যা ১৪০০ এর বেশি, সরকারি গেজেটেড শহীদের সংখ্যা ৮৩৬ জন। তাহলে কি আমরা সেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের শহীদের সংখ্যার মতো জুলাইয়ের শহীদের সংখ্যা নিয়েও রাজনীতি করব? কেন ৬ জন শহীদের লাশ ১ বছর ধরে ঢাকা মেডিকেলে পড়ে থাকে? কেন গণকবর দেওয়া শহীদের পরিচয় আজও চিহ্নিত করা গেল না? আবার যে ফ্যাসিবাদী বাহিনীর কথা বলা হচ্ছে, এই বাহিনীর যারা ছাত্র-জনতার বুকে গুলি চালিয়ে বিপ্লবীদের হত্যা করেছে, তাদেরকে কেন আজও গ্রেপ্তার করা হলো না? এই বাহিনীগুলোর আজও সংস্কার হলো না?
তিনি বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের ১৮ নং পয়েন্টে বলা হয়েছে, গণভবনমুখী জনতার উত্তাল যাত্রার মুখে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়… হাসিনা কি সত্যিই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়? আজও আমরা জানি না কিভাবে হাসিনা ভারতে চলে গেল? সেসময়ই তাকে গ্রেপ্তার করা জরুরি ছিল। সে এতো মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র থেকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড, নরেন্দ্র মোদির আগমনবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড, পরিকল্পিত বিডিয়ার বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন সেনা অফিসারের হত্যাকাণ্ড, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি স্থান পায়নি। এসব ঘটনা এই প্রজন্মের মস্তিষ্ক ও মনস্তত্ত্বে বিপ্লবের বীজ বপণ করে ও তারুণ্যকে বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করে। কিন্তু কেন ও কোন উদ্দেশে তারুণ্যের এই সংগ্রামকে জুলাই ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হলো না?
গণ অধিকারের এই নেতা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। এতে ১/১১ সৃষ্টির ধোঁয়াশা কেটে গেছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।