Your Ads Here 100x100 |
---|
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক আরোপের হুমকিকে একটি সর্বজনীন বৈদেশিক নীতির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। শেষ পর্যন্ত এই অস্ত্র রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতিতে আসতে রাজি করানোর চেষ্টার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে শুরু করেছেন ট্রাম্প। এই পদক্ষেপ অভিনব হলেও ট্রাম্প প্রশাসন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে পড়ার কারণ রয়েছে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা হলো, যারাই রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বুধবার প্রথমবারের মতো ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। যেটাকে রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের প্রথম আর্থিক নিষেধাজ্ঞা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপে রাশিয়ার অর্থনীতি খানিকটা চাপে থাকবে। কারণ, রাশিয়ার তেল রপ্তানি বন্ধ হলে যুদ্ধের ব্যয় সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে। তবে ক্রেমলিন ইতোমধ্যে জানিয়েছে, ট্রাম্পের পদক্ষেপে যে ক্ষতি হবে, তা সামাল দিতে মস্কো প্রস্তুত।
এদিকে রাশিয়ার মিত্রদের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের পদক্ষেপে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তে পারে। এতে ক্ষতির শিকার হবে যুক্তরাষ্ট্রও। এ ছাড়া, আগামী বছরের মধ্যবর্তী কংগ্রেস নির্বাচন রয়েছে ট্রাম্পের সামনে। এতে রাজনৈতিক সংকটে পড়তে পারেন তিনি। এমনকি চীন ও ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির প্রচেষ্টা জটিল করে তুলতে পারে।
রাশিয়ার সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা বিশ্লেষক এবং কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের রাশিয়া এবং ইউরেশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক ইউজিন রুমার মনে করেন, রাশিয়ার ওপর ট্রাম্পের শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞার হুমকির কারণে পুতিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। যদি ভারত ও চীন রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করে, তাহলে তা মস্কোর জন্য বড় আঘাত হবে। কিন্তু তা ঘটবে না। কারণ, চীন ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা রাশিয়ার তেল ক্রয় চালিয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ট্রেজারি কর্মকর্তা কিম্বার্লি ডোনোভান বলেছেন, শুল্ক আরোপের ফলে ভারত ও চীনের সঙ্গে মার্কিন দ্বিপক্ষীয় ও বাণিজ্য সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
কানাডায় হাজার হাজার চাকরি কমেছে
জুলাই মাসে কানাডার অর্থনীতিতে হাজার হাজার কর্মসংস্থান কমেছে। স্ট্যাটিসটিকস কানাডা শুক্রবার জানিয়েছে, এর ফলে শ্রমবাজার আগের মাসের তুলনায় আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছেছে। জুলাইয়ে ৪০ হাজার ৮০০ কর্মসংস্থান কমে যায়। আগের জুন মাসে ৮৩ হাজার কর্মসংস্থান বেড়েছিল। তবে বেকারত্বের হার বহু বছরের সর্বোচ্চ ৬.৯ শতাংশে স্থিতিশীল রয়েছে। ব্যাংক অব কানাডা আগেই জানায়, ট্রাম্পের ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম ও গাড়ির ওপর শুল্ক আরোপ উৎপাদন খাতকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং কোম্পানিগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়া থামিয়ে দিয়েছে। জুলাই মাসে উৎপাদন খাতে নিযুক্ত মানুষের সংখ্যা বার্ষিক ভিত্তিতে প্রায় ১০ হাজার কমেছে। কারণ, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং গাড়ি তৈরির সঙ্গে যুক্ত খাতগুলোয় নিয়োগ কমানো হয়েছে। কর্মীরা ছাঁটাইয়ের সম্মুখীন হয়েছেন।
রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আদায় করছে যুক্তরাষ্ট্র
বিবিসি জানায়, এমন কোনো দিন নেই ট্রাম্প গর্ব করে বলেন না– তিনি প্রায় সব ধরনের আমদানি পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আদায় করছে। প্রচুর অর্থ আসছে। দেশের ইতিহাসে এত অর্থ আগে কখনও আসেনি। শুক্রবার শুল্ক রাজস্বের প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ভুল বলছেন না। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, গত জুলাই মাসে মার্কিন সরকার প্রায় ৩০ বিলিয়ন বা তিন হাজার কোটি ডলার শুল্ক রাজস্ব সংগ্রহ করেছে। গত বছরের জুলাই মাসের তুলনায় যা ২৪২ শতাংশ বেশি। এপ্রিল মাসে প্রায় সব ধরনের পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প।