32.6 C
Dhaka
মঙ্গলবার, আগস্ট ১২, ২০২৫

ইসরায়েলের আগ্রাসন-আলজাজিরার ৫ সাংবাদিককে হত্যা

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
অনলাইন ডেস্কঃ

চার বছরের মেয়ে শামসকে নিজের ‘চোখের আলো’ বলতেন আলজাজিরার সাংবাদিক আনাস আল-শরিফ। তাকে কোলে নিয়ে খুনসুটির ভঙ্গিতে প্রশ্ন করেন, ‘বাবা, ট্রাম্প আমাদের জোর করে গাজা থেকে বের করে দিতে চায়। তুমি কি গাজা ছেড়ে যেতে চাও?’ নির্ভার মেয়ে মৃদু হাসিতে জবাব দেয়, ‘না, আমি গাজায় থাকতে চাই।’ চোখেমুখে উৎকণ্ঠা নিয়ে আনাস মেয়েকে প্রশ্ন করেন, ‘কেন?’ জবাবে সে জানায়, ‘কারণ আমি গাজাকে ভালোবাসি।’

গত রোববার সন্ধ্যায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় চার সহকর্মীর সঙ্গে নিহত হয়েছেন আনাস আল-শরিফ। মেয়ের সঙ্গে এটাই ছিল তাঁর শেষ কথোপকথনের ভিডিও, যা মৃত্যুর পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। উত্তর গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞ তার মাধ্যমে এতদিন বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছাত। উপত্যকায় সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয় না ইসরায়েল।
গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের ফটকের কাছে তাঁবুতে ইসরায়েলের হামলায় আলজাজিরার ওই পাঁচ সাংবাদিক নিহত হন। তারা হলেন– সংবাদদাতা আনাস আল-শরিফ ও মোহাম্মেদ কুরেইকেহ, ক্যামেরাম্যান ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মেদ নৌফাল ও মোয়ামেন আলিয়া। এক বিবৃতিতে কাতারের দোহাভিত্তিক গণমাধ্যমটি বলেছে, ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডটি ছিল গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আরেকটি স্পষ্ট ও পূর্বপরিকল্পিত হামলা।’ হামলার দায় স্বীকার করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে, হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল আনাসের।

আলজাজিরার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোহাম্মেদ মোয়াওয়াদ বিবিসিকে বলেন, গাজায় কী ঘটছে, তা বিশ্বকে জানানোর ‘একমাত্র কণ্ঠস্বর’ ছিলেন আনাস। যুদ্ধের পুরোটা সময়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের গাজায় মুক্তভাবে সাংবাদিকতার অনুমতি দেয়নি। মোয়াওয়াদ বলেন, ‘তারা তাদের তাঁবুতেই হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন। তারা রণাঙ্গন থেকে কাভার করছিলেন না।’

সাংবাদিক আনাসের শেষ বার্তা
দুই শিশু সন্তানের বাবা ছিলেন আনাস। সিএনএন জানায়, নিহত হওয়ার আগে একটি চূড়ান্ত বার্তা প্রস্তুত করে রেখেছিলেন তিনি, যা সহকর্মীরা শেয়ার করেছেন। এতে তিনি লিখেন, ‘আমি অনুরোধ করছি– আমার প্রিয় কন্যা শামসকে দেখাশোনা করবেন। সে আমার চোখের আলো, পরিস্থিতি যাকে আমার স্বপ্নের মতো বেড়ে উঠতে দেয়নি।’ কোলের সন্তান সালাহর দেখাশোনার অনুরোধও জানান তিনি। আনাস লিখেন, ‘আমি আহ্বান জানাই– শৃঙ্খল বা সীমান্তের কারণে চুপ হয়ে যাবেন না। আমাদের অধিকৃত মাতৃভূমিতে মর্যাদা ও স্বাধীনতার সূর্য না ওঠা পর্যন্ত ভূমি ও এর জনগণের মুক্তির সেতুবন্ধন তৈরি করুন।’

সিপিজে ‘বিস্মিত’
কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) বলেছে, তারা এ হত্যাকাণ্ডে ‘বিস্মিত’। সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক সারা কুদাহ বলেন, ‘প্রমাণ না দিয়ে সাংবাদিকদের জঙ্গি চিহ্নিত করার ইসরায়েলের ধরন ও উদ্দেশ্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন তোলে। ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর গাজায় ১৮৬ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে জন্মাষ্টমীর উৎসব : ডিএমপি কমিশনার

খবরের দেশ ডেস্ক : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রাসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী...