চোখ হলো আলোক সংবেদনশীল একটি অঙ্গ যা আমাদের দেখতে সাহায্য করে। চোখে আলো প্রবেশ করে কর্নিয়া, আইরিস, লেন্স, ও রেটিনা পেরিয়ে গিয়ে অবশেষে অপটিক নার্ভের মাধ্যমে মস্তিষ্কে ছবি পাঠায়।
চোখের মূল অংশগুলো:
অংশ কাজ
কর্নিয়া (Cornea) চোখের স্বচ্ছ সামনের পর্দা, যা আলো ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করায়
আইরিস (Iris) চোখের রঙ নির্ধারণ করে এবং আলো নিয়ন্ত্রণ করে
পিউপিল (Pupil) আলো প্রবেশের গর্ত, আলোর পরিমাণ অনুযায়ী ছোট-বড় হয়
লেন্স (Lens) আলো ফোকাস করে রেটিনার উপর সঠিক ছবি গঠন করে
রেটিনা (Retina) আলোক সংবেদনশীল টিস্যু যা ছবি গ্রহণ করে
অপটিক নার্ভ (Optic Nerve) রেটিনা থেকে তথ্য মস্তিষ্কে পৌঁছে দেয়
চোখের কিছু আশ্চর্যজনক তথ্য:
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চোখে প্রায় ১০০ মিলিয়ন রড সেলস (Rod cells) এবং ৬ মিলিয়ন কন সেলস (Cone cells) থাকে, যা আলো ও রঙ চিনতে সাহায্য করে।
আমাদের চোখ প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৪–৫ বার পলক ফেলে। এটি চোখের আর্দ্রতা বজায় রাখে।
রাত্রিতে দেখা যায় Rod cells এর কারণে; আর রঙ বোঝা যায় Cone cells এর মাধ্যমে।
চোখ আমাদের শরীরের সবচেয়ে দ্রুত সাড়া দেওয়া অঙ্গগুলোর একটি – মাত্র ১৩ মিলিসেকেন্ডে প্রতিক্রিয়া দিতে পারে।
দৃষ্টিশক্তি ও রোগ:
সমস্যা বিবরণ
মায়োপিয়া (Myopia) কাছে দেখা যায়, দূরে দেখা যায় না (নিয়মিত চশমা দরকার)
হাইপারোপিয়া (Hyperopia) দূরে দেখা যায়, কাছে দেখা যায় না
অ্যাস্টিগমাটিজম (Astigmatism) চোখের কার্ভে সমস্যা, ছবি ঝাপসা দেখা যায়
ক্যাটারাক্ট (Cataract) চোখের লেন্স ধূসর হয়ে যায়, অস্ত্রোপচারে ভালো হয়
গ্লকোমা (Glaucoma) চোখের চাপ বাড়ে, অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়
চোখের যত্নে কিছু টিপস:
পর্যাপ্ত ঘুম ও পানি পান করুন।
পর্যাপ্ত আলোতে কাজ করুন।
প্রতি ২০ মিনিটে একবার দূরে তাকিয়ে চোখ বিশ্রাম দিন (20-20-20 Rule: ২০ মিনিট পর ২০ সেকেন্ড ২০ ফুট দূরে দেখুন)।
চোখে ধুলোবালি পড়লে চোখ না ঘষে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করান।
মজার তথ্য:
চোখ কখনো “REST” নেয় না, এমনকি ঘুমের সময়ও চোখ মস্তিষ্কের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে (REM sleep)।
সব প্রাণীর চোখ একরকম নয়। যেমন: পেঁচা অন্ধকারে স্পষ্ট দেখতে পায়, মাছ পানির নিচে।
যদি আপনি চোখ নিয়ে আরও নির্দিষ্ট কিছু জানতে চান (যেমন চোখের অপারেশন, রোগ নিরাময়, ব্যায়াম ইত্যাদি), জানিয়ে দিন।