গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেছেন, আমি শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।
পোস্টে রাশেদ খান লেখেন, প্রধান উপদেষ্টা ছাত্রদের দল গঠনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিয়েছেন। কিন্তু একের পর এক বিতর্ক প্রধান উপদেষ্টাসহ বাকি উপদেষ্টাদের বিব্রত করেছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ কয়েকজন উপদেষ্টা আর কারও দায় নিতে চান না। যে কারণে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার ও বিচারের একটা গতিপথ তৈরি করে নির্বাচন দেওয়ার মাধ্যমে শুভ বিদায় নিতে চান। এই বয়সে তাদের কারও বেইজ্জতি হওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই।
তিনি লেখেন, যে কারণে প্রধান উপদেষ্টা যেভাবে বলেছেন, সেই রোডম্যাপ অনুযায়ী কাজ করবেন। তিনি এর কোনো পরিবর্তন করবেন না। সেই সুযোগও তার হাতে নেই। আমি শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়ে নির্বাচন হবে। এবং মাঝে অনেকে জটিলতা বা ১/১১ আনার চেষ্টা করবে। বিষয়টা জেদের ভাত কুত্তা দিয়ে খাওয়ানোর মতো। মানে আমি যেহেতু ক্ষমতায় যাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে পারিনি, সুতরাং অন্য কাউকে ক্ষমতায় যেতে না দিয়ে প্রয়োজনে হট্টগোল তৈরি করে ১/১১ সৃষ্টি করব। কিন্তু ষড়যন্ত্র হলেও ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন হবে। এটা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের ওয়াদা।
কূটনৈতিকপাড়ায় যোগাযোগ বাড়ছে এনসিপির
রাশেদ খান আরও লেখেন, তিনি কারও ফাঁদে পড়ে ওয়াদা ভঙ্গ করবেন না; বরং রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত অযথা সময় নষ্ট না করে মাঠঘাট, গ্রামগঞ্জে গিয়ে গণমানুষের কাছে নিজের দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য তুলে ধরে জনগণের ম্যান্ডেট আদায়ের চেষ্টা করা। এর বাইরে নির্বাচন আটকানোর যত চেষ্টা হবে, এতে নিজের তত বেশি শক্তি ও সময়ের ক্ষয় হবে। সবচেয়ে উপকৃত হবেন তারা, যারা বাগাড়ম্বর বক্তব্য ও ষড়যন্ত্র করার খোয়াব দেখা বাদ দিয়ে মানুষের কাছে তৃণমূলে দ্বারে দ্বারে ছুটে যাবেন।
এর আগে, গতকাল ঝিনাইদহ শহরে একটি রেস্টুরেন্টে ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ২০২৪ সালের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং একটি সফল গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারে করণীয় শীর্ষক’ আলোচনা সভায় রাশেদ খান বলেন, চুনোপুঁটিদের নয়, খুনি শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান কামাল ও শামীম ওসমানদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির দড়িতে ঝোলাতে হবে। এ নিয়ে জাতি কোনো টালবাহানা সহ্য করবে না। প্রয়োজন হলে আরও ১০টি ট্রাইব্যুনাল বসাতে হবে। টাকা না থাকলে জনগণ টাকা দেবে।
তিনি বলেন, দেশ থেকে ফ্যাসিবাদের বিলোপ হয়নি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাভোগীরা এখন টাকার বিনিময়ে এ সরকারের সুবিধা ভোগ করছেন। এটা গণঅভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থি। আর ফ্যাসিবাদ আমলাদের প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে সরকার এক বছরেও দৃশ্যমান কোনো সংস্কার বা সফলতা দেখাতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, চলমান সংস্কার, খুনিদের বিচার ও দেশের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ড. ইউনূস সরকার হাসিনার পরামর্শে দেশ চালাচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে দেশ থেকে মুজিববাদ ও ফ্যাসিবাদ বিলোপ হবে না।
এনসিপির সমালোচনা করে গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, এ দলটি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এটা আমার কথা নয়, টিআইবি প্রধান তাদের কিংস পার্টি বলে আখ্যা দিয়েছেন। তা ছাড়া এনসিপি সমর্থিত দুই উপদেষ্টা পদ নিয়ে দেশ চালাচ্ছেন। তার পরও হাসনাত আব্দুল্লাহ ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করছেন। তাদেরও ভুল ভাঙতে বসেছে।