25 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৫

মোদির মার্কিন সফরে অবৈধ ভারতীয়দের বহিষ্কারের সম্ভাবনা

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী বুধবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মোদি বাণিজ্য ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করবেন।

এই সফরের মাত্র কয়েক দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র শতাধিক অবৈধ ভারতীয়কে শিকল পরিয়ে সামরিক বিমানে করে আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করেছে। আরও অনেককে ফেরত পাঠানোরও পরিকল্পনা চলছে।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে মোদির ১২-১৩ ফেব্রুয়ারির সফরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। কিন্তু এই ঘোষণার চেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে বহিষ্কৃত ১০৪ জন ভারতীয়ের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এমন আচরণ। অথচ সবাই জানে যে দুই দেশের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। এই বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মিশ্রিকে।

বিক্রম মিশ্রি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ভারত সরকারকে জানিয়েছেন যে আরও ৪৮৭ জন সন্দেহভাজন ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বহিষ্কার আদেশ রয়েছে। তাঁদেরও ফেরত পাঠানো হতে পারে। ভারত প্রথমে এই তালিকার ব্যক্তিরা এলেও ভারতের নাগরিক কি না, তা যাচাই করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত ১৬ বছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৫ হাজারের বেশি ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্ট থাকার মেয়াদে বহিষ্কৃতদের সংখ্যা ছিল রেকর্ড পরিমাণে। এই তথ্য ভারতীয় সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী।

এদিকে ট্রাম্প এর আগেও ভারতের উচ্চ শুল্কহার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। তাই ভারত এই সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য শুল্ক থেকে রেহাই পেতে আগ্রহী।

সর্বশেষ এই বহিষ্কারের জন্য সামরিক বিমান ব্যবহারের কারণ ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন বিক্রম মিশ্রি। তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব ব্যবস্থায় এই বহিষ্কারের প্রক্রিয়া জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সম্ভবত সেই কারণেই সামরিক বিমান ব্যবহার করা হয়েছে। ভারতও এতে সম্মতি দিয়েছে।’

মিশ্রি আরও বলেন, ভবিষ্যতে এমন বহিষ্কার কার্যক্রমের জন্য যদি কোনো বাস্তবসম্মত বিকল্প পাওয়া যায়, তবে ভারত তা বিবেচনা করবে।

মোদির আসন্ন যুক্তরাষ্ট্র সফরে ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, প্রযুক্তিসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন মিশ্রি।

ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখা হয়, বিশেষ করে চীনের প্রভাব মোকাবিলায়। সেই কারণে ভারত দীর্ঘদিন ধরে আরও বেশি এইচ ওয়ানবি ভিসার দাবি জানিয়ে আসছে।

এই ভিসা সাধারণত বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের জন্য দেওয়া হয়। আর তা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় তথ্যপ্রযুক্তি খাতে। ভারতের রয়েছে বিশাল আইটি কর্মিবাহিনী। সেই কারণে কারণে যুক্তরাষ্ট্রে দেওয়া এই ভিসার বড় অংশই ভারতীয়দের জন্য বরাদ্দ থাকে। গত বছরের ডিসেম্বরে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি পুরোপুরি এই ভিসা প্রোগ্রামের পক্ষে।

ট্রাম্প ২৭ জানুয়ারি মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। সেই সময় তিনি অভিবাসনের প্রসঙ্গ আনেন। সেই সঙ্গে ভারতকে আরও বেশি মার্কিন নির্মিত নিরাপত্তা সরঞ্জাম কেনার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উত্থাপন করেন।

এদিকে ট্রাম্প এর আগেও ভারতের উচ্চ শুল্কহার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। তাই ভারত এই সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য শুল্ক থেকে রেহাই পেতে আগ্রহী।

একজন জ্যেষ্ঠ ভারতীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারত ইতিমধ্যেই ৩০টির বেশি পণ্যের আমদানি শুল্ক পুনর্বিবেচনার পরিকল্পনা করছে। এসব পণ্যের মধ্যে বিলাসবহুল গাড়ি, সৌরবিদ্যুৎ সেল এবং রাসায়নিক পদার্থ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ১১৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ভারত ৩২ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্তে রয়েছে।

ওয়াশিংটন সফরের আগে মোদি ১০ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি প্যারিস সফর করবেন। সেখানে তিনি এক এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) সম্মেলনে অংশ নেবেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও করবেন।

 

  • শিবম প্যাটেল   রয়টার্সের সাংবাদিক

 

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

শেখ হাসিনা ফিরে এলে জনগনই ব্যবস্থা নিবে- বিএনপি মহাসচিব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনেকেই আশঙ্কা করছেন, ফ্যাসিবাদী চরিত্র নিয়ে শেখ হাসিনা আবারো ফিরে...