- Advertisement -
Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্ক :
বুয়েটের সমাবর্তনে এক যুবক বক্তৃতা দিতে গিয়ে বললেন—
“আমার মতো ছাত্র বুয়েট আর দ্বিতীয়টি পাবে না, আর আসবেও না, আমিই শেষ।
আমি আজ বেরিয়ে যাচ্ছি। আমার মতো আর কোনো ছাত্র এই বুয়েটে ভর্তি হতে পারবে না। আজ আমি গর্বিত যে এত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আমি ছাত্র ছিলাম।”
কথা বলতে বলতে তার চোখ থেকে অবিরাম জল পড়ছিল। তখন একজন প্রফেসর তাকে জিজ্ঞেস করলেন—
“তোমার গর্বিত হওয়ার কারণ কী?”
জবাবে ছেলেটি বলল—
“কমলাপুর রেলস্টেশনের পাশে একচালা এক বস্তির ঘরে আমার জন্ম। হ্যাঁ, আমি বস্তিরই ছেলে। বাবা যখন মারা যান, আমি তখন খুব ছোট। আমাকে বড় করে মানুষ করার জন্য আমার মা দিনের বেলায় ভিক্ষা করতেন আর রাতে এক বাসায় ঝির কাজ করতেন। আমি ওই বস্তিরই স্কুলে পড়তাম। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভালো ছিলাম।
মায়ের একার রোজগারে সংসার চলত না, তাই আমি কমলাপুর স্টেশনে বাদাম বিক্রি করতাম। স্টেশনে বাদাম নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সময় কোথাও কোনো পড়ে থাকা ইংরেজি পত্রিকা কাগজ কুড়িয়ে এনে পড়ার চেষ্টা করতাম। আমি যখন তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হই, বস্তির স্কুলে সর্বোচ্চ নম্বর পাই।
আমার পড়াশোনার আগ্রহ দেখে একজন ভদ্রলোক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। আজ সেই ভদ্রলোকের জন্যই আমি এত দূর পর্যন্ত আসতে পেরেছি। এর জন্য আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই।
আজ আর আমার মা বেঁচে নেই। বেঁচে থাকলে জড়িয়ে ধরে বলতাম—‘মা, তোমার বাদাম বিক্রি করা ছেলে বুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে।’ কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস—তিনি তো আর নেই।
তবুও আমার একটাই পরিচয়—আমি বস্তির ছেলে। এই কথা বলতে আমার কোনো দ্বিধা হয় না।”