Your Ads Here 100x100 |
---|
গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সমন্বয়ক সারজিস আলম এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন। শনিবার দুপুরে জাতীয় নাগরিক কমিটির গাজীপুর জেলা ও মহানগর শাখার আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ছাত্র-জনতা হামলার প্রতিবাদে ফ্যাসিবাদবিরোধী স্লোগান দেন এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
গাজীপুর শহরের ভাওয়াল রাজবাড়ি সড়কে অবরোধের মাধ্যমে এই সমাবেশের সমাপ্তি ঘটে। আন্দোলনকারীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এসময় তারা সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সমালোচনা করেন এবং অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানান। হামলার ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সবার মধ্যে একধরনের ক্ষোভ তৈরি হয়।
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গাজীপুর নগরের ধীরাশ্রম দাক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ির সামনে স্থানীয়দের হামলার শিকার হন শিক্ষার্থীরা। হামলার পর ১৫ জনের মতো শিক্ষার্থী আহত হন এবং তাদের প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গুরুতর আহত সাতজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ হামলার পেছনে একটি বড় কারণ হিসেবে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন যে, পুলিশের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করা এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া জনগণের মধ্যে আরও ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। বক্তারা গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে অপসারণের দাবি তোলেন এবং সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক আলী নাসের খান এই ঘটনায় সরকারের দোষী কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবি জানান। তিনি বলেন, “হামলার ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা এবং নির্দোষ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ফলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” তার মতে, যদি দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তবে এই ধরনের অরাজকতা আরো বৃদ্ধি পাবে।
গাজীপুরে সেদিনের ঘটনার পর জনগণ এবং বিভিন্ন সংগঠনও এই বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। ছাত্র-জনতার পাশাপাশি সাধারণ জনগণও সমাবেশে যোগ দেন এবং তাদের সমর্থন জানান। স্লোগান এবং প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে তারা হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেন এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
এদিকে, হামলার বিষয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানায়, হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে এবং তদন্তের মাধ্যমে ঘটনা সুষ্ঠুভাবে নিষ্পত্তি করার চেষ্টা চলছে। তবে হামলার ঘটনাটি একে একে বিভিন্ন দিকে ঘুরতে থাকে এবং প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে নানা অভিযোগ উঠে।
এ ঘটনায় একদিকে, গাজীপুরের নাগরিক সমাজ আন্দোলনকারীদের পক্ষে অবস্থান নেয়, অন্যদিকে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভও বাড়তে থাকে। গাজীপুরে এই ধরনের অরাজকতা ও হামলার ঘটনা একটি বড় ধরনের সংকেত দেয়, যেখানে প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এই ঘটনায় শুধু ছাত্র-জনতাই নয়, বরং সারা দেশেই মানুষের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। সরকার ও প্রশাসনকে উচিত হবে অবিলম্বে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং তদন্ত প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করা। সকলের দাবি, এই ধরনের সহিংসতা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে, সে জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।
গাজীপুরের এই ঘটনার পর, আন্দোলনকারীরা তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন এবং আগামীদিনে বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা আশা করেন যে, তাদের দাবি বাস্তবায়িত হলে, ভবিষ্যতে এ ধরনের সহিংসতা রোধ সম্ভব হবে।