31.2 C
Dhaka
বুধবার, আগস্ট ২০, ২০২৫

ফিঙ্গারপ্রিন্ট পদ্ধতির আসল জনক কে, জানলে চমকে যাবেন !

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
খবরের দেশ ডেস্ক :
১৮৯২ সাল, ব্রিটিশ ভারতের কলকাতা। রাইটার্স বিল্ডিংয়ের ধূসর করিডোর তখন রহস্যে মোড়া। সেখানে একজন তরুণ গণিতবিদ কাজ শুরু করেন—তার চোখে অদ্ভুত এক তীক্ষ্ণতা, নাম কাজি সৈয়দ আজিজুল হক। খুলনার নিভৃত পয়োগ্রামের কসবায় জন্ম নেওয়া সেই তরুণ, কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে গণিত পড়া শেষ করে সদ্য সাব-ইন্সপেক্টর হয়েছেন।
সেই সময়, অপরাধী চিহ্নিত করার একমাত্র উপায় ছিল অ্যানথ্রোপোমেট্রি—মানবদেহের মাপ-ঝোঁক। কিন্তু এই পদ্ধতি ছিল ত্রুটিপূর্ণ, অপর্যাপ্ত। হক বুঝেছিলেন, প্রতিটি মানুষ তার দেহে বয়ে বেড়ায় এক অনন্য রহস্যের চাবিকাঠি—আঙুলের ছাপ।
রাতের পর রাত, দিনের পর দিন—রাইটার্স বিল্ডিংয়ের অন্ধকার ঘরে, একরাশ ফিঙ্গারপ্রিন্ট আর কিছু স্লিপ কাগজ নিয়ে কাজ চালিয়ে যান হক। সবার অগোচরে তৈরি করতে থাকেন এক গণিতনির্ভর শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি, যা লাখ লাখ ছাপকে কয়েক সেকেন্ডেই শনাক্ত করতে পারে। এক হাজার চব্বিশটি খোপ, বাহাত্তর রকমের গাণিতিক ছাঁকনি—এই ছিল তার গোপন অস্ত্র।
১৮৯৭ সাল নাগাদ, তিনি তৈরি করে ফেলেন সাত হাজারেরও বেশি ফিঙ্গারপ্রিন্টের সংগ্রহ। তার কাজ এতটাই নিখুঁত, এতটাই নির্ভুল, যে একে পাশ কাটানো অসম্ভব।
কিন্তু তখনই শুরু হয় আসল চক্রান্ত। ঊর্ধ্বতন কর্তারা তার গবেষণাকে ‘হেনরি সিস্টেম’ নামে চালিয়ে দিতে চান। হক নীরবে প্রতিবাদ করেন না, কিন্তু থামেন না। তিনি জানতেন—কোনো না কোনো দিন ইতিহাস তার প্রাপ্য দেবে।
তবু ব্রিটিশ সরকার তাকে এক ‘খান বাহাদুর’ উপাধি ও পাঁচ হাজার টাকা দিলো। পদোন্নতি পেলেন, হলেন এসপি। কিন্তু গ্লানির ভার রয়ে গেল মনে—নিজের নামেই যে পদ্ধতিটি ইতিহাসে থাকা উচিত ছিল, সেটি আজও ‘হেনরি সিস্টেম’ নামে পরিচিত।
তবু একাকী লড়াই থামাননি। চম্পারানের মতিহারিতে নিজের বাড়ি ‘আজিজ মঞ্জিল’-এ কাটান জীবনের শেষ অধ্যায়। ১৯৩৫ সালে সেখানেই মৃত্যু হয় এই বিস্মৃত বাঙালি বিজ্ঞানীর। নির্জনে, এক গোপন কক্ষে, ফিঙ্গারপ্রিন্টের বিশাল খাতা রেখে যান ভবিষ্যতের জন্য। অনেকেই বলে, সেই খাতায় এমন কিছু ছাপ লিপিবদ্ধ ছিল, যা ভারতের কিছু অপ্রকাশিত অপরাধের চাবিকাঠি!
আজ, সেই অজানা নায়কের নামে আছে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার—‘দ্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট সোসাইটি আজিজুল হক অ্যান্ড হেমচন্দ্র বোস প্রাইজ’। আর ইতিহাস ধীরে ধীরে তাকে তার জায়গা ফিরিয়ে দিচ্ছে।
- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

যতই চ্যালেঞ্জিং হোক, সুস্থ সবল প্রজন্ম গড়ে তুলতেই হবে: প্রধান উপদেষ্টা

খবরের দেশ ডেস্ক: প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতিতেই হোক এবং যতই চ্যালেঞ্জিং হোক, আমাদের সুস্থ সবল...