27.6 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫

হতদরিদ্রদের টুইন পিট ল্যাট্রিন নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় জনস্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে হতদরিদ্রদের জন্য টুইন পিট ল্যাট্রিন নির্মাণ, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ রয়েছে, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে শুধু কাগজে-কলমে কাজ দেখানো হয়েছে। অনেক জায়গায় কাজ শুরু হলেও তা বছরের পর বছর ফেলে রাখা হয়েছে। এসব অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে উপজেলা জনস্বাস্থ্য দফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী উত্তম কুমার সিংহের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, তিনি রংপুরে অবস্থান করেন এবং সপ্তাহে মাত্র ২-৩ দিন অফিস করেন।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি প্রকল্পের আওতায় ২০২৫ সালের মধ্যে উপজেলার প্রতি ইউনিয়নে ২২৯টি করে মোট ৬টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৩৭৪টি টুইন পিট ল্যাট্রিন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি ল্যাট্রিন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা করে, যার মোট ব্যয় দাঁড়ায় প্রায় ৪ কোটি ১২ লাখ ২০ হাজার টাকা।

এ প্রকল্পের কাজ পেয়েছেন কুড়িগ্রামের আমিনুল ইসলাম ও বগুড়ার সিরাজসহ একাধিক ঠিকাদার। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিটি ল্যাট্রিন নির্মাণে ১০ হাজার টাকারও কম ব্যয় করে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের কোদালধোয়ারপাড় গ্রামের জয়নাল মিয়ার বাড়িতে নির্মিত ল্যাট্রিনে ইটের রাবিশ ব্যবহার করে ঢালাই কাজ করা হয়েছে। তার স্ত্রী মেরেজা বেগম বলেন, ইটের রাবিশ দিয়ে ঢালাই করছে, কাজের মান খুবই খারাপ হয়েছে।

একই এলাকার গোলজার মিয়ার স্ত্রী মরশেদা বেগম বলেন, ফিরোজ মিয়া নামে একজনকে ৪ হাজার টাকা দিয়ে ল্যাট্রিন বরাদ্দ নিতে হয়েছে, কিন্তু কাজ একেবারেই নিম্নমানের হয়েছে।

ভরটপাড়া (নয়াগ্রাম) গ্রামের গোলজার আলীর স্ত্রী রওশন আরা বেগম জানান, ল্যাট্রিনের জন্য আনা ১০টি রিংয়ের মধ্যে ৬টি হাতে ধরতেই ভেঙে যায়। পরে নিজ খরচে ১ হাজার ৮০০ টাকা ব্যয়ে নতুন রিং কিনে বসান তিনি। একই এলাকার শাহ আলম মিয়াও জানান, ৩টি রিং নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাকে নিজ অর্থায়নে নতুন রিং কিনতে হয়েছে।

বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ল্যাট্রিন নির্মাণে ব্যবহার করা খুঁটি, কাঠ, টিন, রিং-স্ল্যাবসহ প্রায় সব উপকরণই নিম্নমানের। ফলে হস্তান্তরের আগেই এসব ল্যাট্রিন প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরের ‘মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যবিধি’ প্রকল্পের আওতায় ৩৫টি কমিউনিটি বেজ (৪০ পরিবার) গভীর নলকূপ, ২টি লার্জ স্কিম (৩৫০-৪০০ পরিবার), ৪২টি নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প (১০ পরিবার ভিত্তিক), ২৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক নির্মাণ, এসব কাজও দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে। ফলে ভোগান্তিতে রয়েছেন এসবের সুবিধাভোগীরা।

ঠিকাদার আমিনুল ইসলাম মাস্টার বলেন, আমি চিলমারী উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে মোট ৯১৬টি ল্যাট্রিন নির্মাণের কাজ পেয়েছি। আমি কেবল টিন, প্যান ও ওয়াই-জংশন সরবরাহ করি। স্থানীয় উদ্যোক্তারাই বাকি কাজ করেন। খারাপ কাজের সুযোগ নেই।

অপর ঠিকাদার সিরাজ জানান, আমি মাত্র ২২৯টি ল্যাট্রিনের কাজ পেয়েছি। গরীব মানুষের জন্য কাজ করেছি এবং যথাযথভাবে কাজ সম্পন্ন করেছি।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী উত্তম কুমার সিংহ বলেন, ৬টি ইউনিয়নে ২২৯টি করে মোট ১ হাজার ৩৭৪টি টুইন পিট ল্যাট্রিন নির্মাণের বরাদ্দ এসেছে। এ পর্যন্ত ৫০০টির কাজ শেষ হয়েছে। কাজের বরাদ্দ জেলা অফিস থেকে হয়, তাই আমি বিশেষ কিছু জানি না। এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

নারী ভোটেই ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের বড় সাফল্য

খবরের দেশ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রার্থীদের বড় ধরনের সাফল্যে নারী ভোটারদের প্রভাবশালী...