লোকসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই। শনিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে জিহান ফারিহা।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছিলেন এ গুণী শিল্পী। সপ্তাহে দুই দিন নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে হতো তাকে। সর্বশেষ ২ সেপ্টেম্বর ডায়ালাইসিসের জন্য মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে সেখানেই ভর্তি করা হয় এবং পরবর্তীতে আইসিইউতে রাখা হয়। গত বুধবার অবস্থার আরও অবনতি হলে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয় তাকে। অবশেষে শনিবার রাতে তিনি চিরবিদায় নেন।
১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। অল্প বয়সেই সংগীতে প্রবেশ করেছিলেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে, ১৯৬৮ সালে শুরু হয় তার পেশাদার সংগীতযাত্রা। প্রথমে নজরুলসংগীত ও আধুনিক গান গাইলেও পরবর্তীতে নিজেকে নিবেদিত করেন লালনসংগীতে। কুষ্টিয়ায় দীর্ঘদিন লালনসঙ্গীত চর্চা করে হয়ে ওঠেন তিনি “লালনকণ্ঠী” ফরিদা পারভীন।
সংগীতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন। ১৯৯৩ সালে অন্ধ প্রেম চলচ্চিত্রের “নিন্দার কাঁটা” গানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৮ সালে লাভ করেন জাপানের মর্যাদাপূর্ণ ফুকুওয়াকা পুরস্কার।
আধুনিক ও দেশাত্মবোধক গানেও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন তিনি। জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে— “তোমরা ভুলে গেছ মল্লিকাদির নাম”, “এই পদ্মা এই মেঘনা” প্রভৃতি।
লোকসংগীতকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়া এ মহীরুহের বিদায়ে দেশ হারাল এক অমূল্য সাংস্কৃতিক সম্পদ।