Your Ads Here 100x100 |
---|
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সুরা গ্রামে দাঁড়িয়ে আছে কয়েক শতাব্দী প্রাচীন এক স্থাপত্য নিদর্শন— সুরা মসজিদ। সুলতানি আমলের এই মসজিদটি শুধু নামাজ আদায়ের স্থান নয়, বরং বাংলার প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্যকলার এক অনন্য সাক্ষী।
ঐতিহাসিকদের মতে, সুরা মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল প্রায় ১৫শ শতাব্দীতে। যদিও নির্দিষ্ট করে প্রতিষ্ঠাতার নাম পাওয়া যায় না, তবে ধারণা করা হয়, স্থানীয় শাসক বা ধর্মপ্রাণ কোনো ব্যক্তি মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদটি নির্মাণ করেন। সময়ের ব্যবধানে একাধিকবার সংস্কার হলেও এর মূল কাঠামো এখনো বহন করছে প্রাচীন স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য।
মসজিদটি এক গম্বুজ বিশিষ্ট।
নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে পোড়ামাটির ইট, চুন-সুরকি ও পাথর।
দেয়ালগুলো অত্যন্ত পুরু ও দৃঢ়, যা সুলতানি আমলের স্থাপত্যের পরিচয় বহন করে।
ভেতরে রয়েছে সুন্দরভাবে অলঙ্কৃত মিহরাব।
বাইরের দেয়ালে এখনো কিছু পোড়ামাটির কারুকাজ টিকে আছে।
সরলতা ও দৃঢ়তা—এই দুটি বৈশিষ্ট্যই মসজিদটিকে আলাদা করেছে।
স্থানীয় মুসল্লিরা এখনো এই মসজিদে প্রতিদিন নামাজ আদায় করেন। পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে ইতিহাসপ্রেমী মানুষ ও পর্যটকেরা এটি দেখতে আসেন। যদিও সময়ের সাথে সাথে কিছু অংশ ক্ষয়ে গেছে, তবুও এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে, যথাযথ সংরক্ষণ ব্যবস্থা না নিলে সময়ের সাথে সাথে এই অমূল্য স্থাপত্য হারিয়ে যেতে পারে। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও পর্যটন সুবিধা বাড়ানো গেলে সুরা মসজিদ শুধু ধর্মীয় নয়, একটি ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে।
বাংলার ইতিহাস ও স্থাপত্য ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো দিনাজপুরের সুরা মসজিদ। প্রাচীন স্থাপত্যের এই নিদর্শন আমাদের ঐতিহ্য বহন করছে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য রেখে যাচ্ছে এক গৌরবময় ইতিহাস।
কৌশিক চৌধুরী, হিলি প্রতিনিধি