27.6 C
Dhaka
রবিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫

শুধু প্রার্থনা করি, মৃত্যুর আগে যেন সন্তানের ভিসা আসে : ঈমান আল-খাতিব

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজার দেইর আল-বালাহ অঞ্চলে ১ মার্চ ভোরে ভাইবোনদের সঙ্গে কম্বলের নিচে ঘুমিয়ে ছিল ৯ বছরের মারিয়াম সাব্বাহ। হঠাৎ তাদের বাড়িতে আঘাত হানে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র। প্রথম আক্রমণ থেকে বেঁচে গেলেও বাবা-মায়ের দিকে দৌড় দেওয়ার সময় দ্বিতীয় ক্ষেপণাস্ত্রে মারাত্মকভাবে আহত হয় সে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
মারিয়ামের মা ফাতমা সালমান বলেন, “আমি দেখছিলাম, ও আমার দিকে আসছে। হঠাৎ আরেকটা বিস্ফোরণ হলো, আর ধোঁয়ার ভেতরে সে হারিয়ে গেল।” পরে মাটিতে রক্তে ভেজা অবস্থায় মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখেন তারা। বিস্ফোরণে মারিয়ামের বাঁ হাত ছিঁড়ে যায়, শরীর ভেদ করে শেল ও গুলি প্রবেশ করে, আর পেট থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এতে ব্লাডার, জরায়ু ও অন্ত্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আল-আকসা হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে চিকিৎসা দিয়েছেন ব্রিটিশ সার্জন ড. মোহাম্মদ তাহির। তিনি বলেন, মারিয়ামের মতো আহত শিশুদের বাঁচতে বিশেষ ধরনের পুনর্গঠনমূলক অস্ত্রোপচার জরুরি, নইলে স্বাভাবিক জীবনযাপন অসম্ভব।
মারিয়াম গাজার সেই হাজারো মানুষের একজন, যারা গত ২৩ মাস ধরে ইসরায়েলের হামলায় আহত বা বিকলাঙ্গ হয়েছে। ধারাবাহিক বিমান হামলা, হাসপাতালের ওপর আক্রমণ এবং খাদ্য-ওষুধ সরবরাহ বন্ধ থাকায় গাজার স্বাস্থ্য খাত প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। চিকিৎসকেরা গুরুতর আহত ও অসুস্থদের সেবা দেওয়ার মতো সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত সাত হাজার ৬৭২ রোগীকে (এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৩৩২ শিশু) জরুরি চিকিৎসার জন্য গাজা থেকে বাইরে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনুমোদন প্রক্রিয়া ধীর, জটিল ও কঠোর। ডব্লিউএইচওর তথ্য বলছে, অনুমতি না পেয়ে চিকিৎসার অভাবে ৭০০-র বেশি রোগী মারা গেছে— যাদের অধিকাংশই শিশু।
মারিয়ামের পরিবারও সেই দুর্ভোগের শিকার। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের প্রস্তাব দিলেও, অনুমতির অপেক্ষায় দুই মাসে তার অবস্থা আরও খারাপ হয়। পরে তাকে মিসরে নেওয়া হলেও এখনো মার্কিন ভিসার অপেক্ষায় আছে পরিবার।
একইভাবে মিসরে আটকে আছে ১৮ বছরের নাসের আল-নাজ্জার। জানুয়ারিতে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে হামলায় তার মুখ-চোয়াল চূর্ণবিচূর্ণ হয়, হারায় চোখ ও নাক। টেক্সাসের এল পাসো হাসপাতালে চিকিৎসার প্রস্তুতি থাকলেও ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
১০ বছরের আহমেদ দুয়াইকও হাত হারিয়ে ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে বেঁচে আছে। ভিসা বাতিলের খবর শোনার পর থেকে সে মানসিক চাপে দিন কাটাচ্ছে। তার মা ঈমান আল-খাতিব বললেন, “আমরা অসহায়। এখন শুধু প্রার্থনা করি, মৃত্যুর আগে যেন সন্তানের ভিসা আসে।”
কায়রোর মার্কিন দূতাবাসে সাক্ষাৎকারের কয়েক দিন আগে হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসার ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এই সিদ্ধান্ত আসে ডানপন্থি কর্মী লরা লুমারের প্রচারণার পর। তিনি সামাজিক মাধ্যমে দাবি করেছিলেন, “কেন ইসলামী অনুপ্রবেশকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে?”
ডব্লিউএইচওর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গাজা থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র মাত্র ৪৮ জনকে চিকিৎসার জন্য ভিসা দিয়েছে। বিপরীতে মিসর অনুমোদন দিয়েছে তিন হাজার ৯৯৫ জনকে, সংযুক্ত আরব আমিরাত দিয়েছে এক হাজার ৪৫০ জনকে এবং যুক্তরাজ্য নিয়েছে মাত্র ১৩ জন।
- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

শেষ পর্যন্ত হাসল বাংলাদেশ

  খেলাধুলা ডেস্ক : জয় থেকে তখনও ২৫ রান দূরে ছিল বাংলাদেশ। ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার বলছিলেন, “এখন থেকে ম্যাচটা একমাত্র বাংলাদেশেরই।”...