27 C
Dhaka
রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে মারধর

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের শিবির ট্যাগ দেওয়ার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়কারীকে মারধর করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান  ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী মো. ইমরান আল আমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষার্থীদের  সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরের পর উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয় শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। এ সময় স্বৈরাচারের দোসর ও ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের অভিযোগে উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থান নেন তাঁরা। শিক্ষার্থীদের ওই অংশ উপাচার্য শুচিতা শরমিনের বিরুদ্ধে দুই শিক্ষক প্রতিনিধিকে সিন্ডিকেট থেকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসনের অভিযোগ এনে এবং পাতানো সিন্ডিকেট প্রতিহত করার ডাক দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান নিয়ে তাঁরা নানা স্লোগান দেন। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করেন।

ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে অভিযুক্তদের প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা গেছে। তাঁরা হলেন লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহিদ, কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম (রকি) ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত।

ভুক্তভোগী ইমরান আল আমিন বলেন, ‘আমার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে আমি ঠিকমতো কথা বলতে পারছি না। আমার ওপর হামলাকারী ও ইন্ধনদাতাদের বিচার চাই।’

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম ও সাখাওয়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে অভিযুক্ত রাকিবুল ইসলাম হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি হামলা বা মারধর করিনি। ঘটনাস্থলের এক পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে  আন্দোলনকারী একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। অথচ ইমরান উপাচার্যের পক্ষে হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করছেন এবং স্বৈরাচারের দালালি করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শিবির ট্যাগ দিয়েছেন। সে জন্য শিক্ষার্থীরা তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ টি এম রফিকুল ইসলামের কাছে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেননি।

এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র মাইনুল ইসলাম রাতে এই বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠান। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলনের নামে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং সুনাম ক্ষুণ্ন করার পাঁয়তারা করছে। এ সময় একজন শিক্ষার্থীকে তারা শারীরিকভাবে আঘাত করেছে। এই ঘটনা কথা বলা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার শামিল।’

বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তিক বিষয়ে আন্দোলন করার সবার অধিকার আছে। সেই আন্দোলনের বিপরীতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাও সবার রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তিক দাবিকে নিজেদের দাবি মনে করে এবং সবার যৌক্তিক সমালোচনাকে সম্মান জানায়। তবে আন্দোলন অবশ্যই শৃঙ্খলা ও শান্তিপূর্ণ হতে হবে। কিন্তু সেখানে আন্দোলনের নামে একজন শিক্ষার্থীকে মারধর এবং বিশৃঙ্খলার নিন্দা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আন্দোলনকারীদের আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলো সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছি।’

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় সরকার: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন চীন সফরকে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে...