27 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ১৪, ২০২৫

বৈবাহিক ধর্ষণ আইনত অপরাধ নয় : ভারতের আদালত

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

বৈবাহিক সম্পর্কে স্বামীর ‘অস্বাভাবিক যৌন আচরণ’ স্ত্রীর অসম্মতিতেও অপরাধ বলে গণ্য হবে না- এমনই বিতর্কিত রায় দিয়েছে ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের হাইকোর্ট। আদালতের এই রায়ে ছাড়া পেয়েছেন ৪০ বছর বয়সের এক ব্যক্তি।

তিনি জোর করে তার স্ত্রীর সঙ্গে অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। যার ফলে গুরুতর শারীরিক জটিলতা দেখা দেয় তরুণী স্ত্রীর। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুও হয়। আদালতের রায়ে স্বামী খালাস পাওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্কের কারণে একজন নারীর মৃত্যু হওয়ার পরও কীভাবে অভিযুক্ত স্বামী দোষমুক্ত হলেন? নারী অধিকার কর্মীরা বলছেন, এ রায় বিপজ্জনক নজির তৈরি করেছে। রায়টি এমন বার্তাই পাঠিয়েছে যে, স্বামী হলেই তার স্ত্রীর সঙ্গে যা খুশি করার অধিকার আছে। এমনকি খুন করেও সে পার পেয়ে যেতে পারে।

ভারতে দীর্ঘ দিন ধরেই ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ নিয়ে বিতর্ক চলছে। তার মধ্যেই এমন রায় দিল ছত্তিশগড় হাইকোর্ট। ভারতীয় পত্রিকাগুলোতে বলা হচ্ছে, ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল প্রায় ৮ বছর আগে। ২০১৭ সালে ডিসেম্বরে।

স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সঙ্গে অপ্রাকৃতিক যৌন সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ ওঠে বস্তার জেলার জগদলপুর শহরের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এরপর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসকদের মতে, ওই নারীর তলপেট ও পায়ুপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পারিটোনাইটিস ও মলদ্বারে ছিদ্রজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি।

এ ঘটনার পর মারা যাওয়া স্ত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে স্বামীর বিরুদ্ধে ‘অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্ক’ ও ‘হত্যা চেষ্টা’র অভিযোগ আনা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ), ৩৭৭ (অস্বাভাবিক যৌনতা) এবং ৩০৪ ধারায় মামলা দায়ের হয়।

গত সোমবার সেই মামলাতেই হাইকোর্ট জানায়, বৈবাহিক ধর্ষণ ভারতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়।

আদালত জানিয়েছে, স্ত্রীর বয়স ১৮ বছরের কম না হলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে কোনও ধরনের যৌনতাকে ধর্ষণ হিসেবে ধরা হবে না। ভারতীয় ন্যায়সংহিতার ৩৭৫ ধারা অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌন সম্পর্ক ধর্ষণের সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না। ৩৭৫ ও ৩৭৭ ধারার মধ্যে সংঘর্ষ থাকায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এই ধারাগুলোর ভিত্তিতে মামলা চলতে পারে না।

গত বছরের ১৯ নভেম্বর মামলার রায় স্থগিত রেখেছিল হাইকোর্ট। এরপর গত ১০ ফেব্রুয়ারিতে ওই ব্যক্তিকে মুক্তির নির্দেশ দেন বিচারপতি।

ভারতে বর্তমানে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ আইনত অপরাধ নয় এবং এটিকে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে কিনা- তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলার শুনানি চলছে। তবে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের অবসরজনিত কারণে সেই শুনানি আপাতত স্থগিত রয়েছে।

ভারত সরকারের মতে, বৈবাহিক সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সুরক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’কে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার প্রয়োজন নেই। সংসদ ইতোমধ্যে দাম্পত্য জীবনে নারীর সম্মতির সুরক্ষায় কিছু পদক্ষেপ নেওয়ায় নতুন আইন প্রণয়নও প্রয়োজনীয় নয় বলেই ভাষ্য সরকারের।

 

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

আমির খানের নতুন প্রেমিকা কে?

তৃতীয় বিয়ের গুঞ্জন সত্যি করে অবশেষে নতুন প্রেমিকাকে প্রকাশ্যে আনলেন বলিউড অভিনেতা আমির খান। আজ তার জন্মদিন। বিশেষ এ...