29 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৫

ধূমপায়ী না হয়েও ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হাজারো মানুষ

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

ধূমপান না করেও ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বায়ুদূষণ এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসার গবেষণা সংস্থা আইএআরসি (IARC) এ বিষয়ে সাম্প্রতিক তথ্য প্রকাশ করেছে।

আইএআরসির তথ্য অনুসারে, যারা কখনো ধূমপান করেননি, তাদের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসার বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর পঞ্চম প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব রোগীর ক্ষেত্রে মূলত অ্যাডেনোকার্সিনোমা নামক ফুসফুস ক্যানসারের একটি ধরন বেশি দেখা যাচ্ছে। ফুসফুস ক্যানসারের চারটি উপধরনের মধ্যে এটি অন্যতম প্রধান।

ল্যানসেট রেসপিরেটরি মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত আইএআরসির এক গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালে প্রায় ২ লাখ মানুষ অ্যাডেনোকার্সিনোমার সঙ্গে বায়ুদূষণের সংস্পর্শে এসেছিল। গবেষণাটি দেখিয়েছে, পূর্ব এশিয়া, বিশেষত চীনে, বায়ুদূষণের কারণে অ্যাডেনোকার্সিনোমার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি।

আইএআরসির ক্যানসার নজরদারি শাখার প্রধান এবং গবেষণার প্রধান লেখক ফ্রেডি ব্রে গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকির ধরন পরিবর্তন হচ্ছে এবং এটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। তিনি মনে করেন, যদি ধূমপান ফুসফুস ক্যানসারের প্রধান কারণ না হয়, তবে অন্যান্য কারণ, বিশেষ করে বায়ুদূষণ, আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করা জরুরি।

বিশ্বজুড়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। ২০২২ সালে বিশ্বে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ফুসফুস ক্যানসারের চারটি প্রধান উপধরন হলো— অ্যাডেনোকার্সিনোমা, স্কুয়ামাস সেল কার্সিনোমা, স্মল সেল কার্সিনোমা ও লার্জ সেল কার্সিনোমা। আইএআরসি জানিয়েছে, নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যেই অ্যাডেনোকার্সিনোমা বর্তমানে প্রধান উপধরন হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

২০২২ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত পুরুষদের মধ্যে ৪৫.৬ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে ৫৯.৭ শতাংশ অ্যাডেনোকার্সিনোমায় ভুগছিলেন। ২০২০ সালে এই হার ছিল যথাক্রমে ৩৯ শতাংশ এবং ৫৭.১ শতাংশ।

আইএআরসি আরও জানিয়েছে, যারা কখনো ধূমপান করেননি, এমন রোগীদের মধ্যে ৭০ শতাংশই অ্যাডেনোকার্সিনোমায় আক্রান্ত। গত ৪০ বছরে পুরুষদের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসারের হার কিছুটা কমলেও নারীদের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বর্তমানে ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যাই বেশি (২০২২ সালে প্রায় ১৬ লাখ পুরুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন), তবে নারী ও পুরুষের মধ্যে এই ব্যবধান কমছে। ২০২২ সালে প্রায় ৯ লাখ নারী ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন।

২০২৩ সালে গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত নারীর সংখ্যা পুরুষের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে। তখন বিশেষজ্ঞরা নারীদের স্তন ক্যানসারের মতোই ফুসফুস ক্যানসারের প্রতিও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেমন নারীদের স্তনে চাকা অনুভূত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি, তেমনি ফুসফুস ক্যানসারের লক্ষণগুলোর প্রতিও সতর্ক থাকতে হবে।

বিশ্বব্যাপী ধূমপান না করেও ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে, তবে এর সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান এখনো জানা যায়নি। বিজ্ঞানীরা ধূমপান ছাড়াও ফুসফুস ক্যানসারের অন্যান্য কারণ চিহ্নিত করার জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

গণতান্ত্রিক ঐক্যের উপর নির্ভর করছে সংলাপের সফলতা: আলী রীয়াজ

গণতন্ত্রের স্বপ্ন যদি সত্যিই বাস্তবায়নের পথে হাঁটে, তবে সেই পথ হবে দলগুলোর ঐক্য—এমন অভিমত প্রকাশ করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের...