26 C
Dhaka
শুক্রবার, মে ২, ২০২৫

নতুন দলের একতা: ঐক্য রক্ষার কৌশল কী?

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

জাতীয় নাগরিক পার্টি, বৃহস্পতিবার নাম প্রকাশের পর থেকেই দেশব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ছাত্রদের নিয়ে গঠিত এই নতুন রাজনৈতিক দলটি নিয়ে নানা আলোচনা, বিতর্ক এবং কৌতূহল শুরু হয়েছে। দলের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারবে কিনা, দলের পরিচিতি ও নেতৃত্বের দিক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে দলটি আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে, যেখানে সকল প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। তবে দলের অভ্যুদয়ের মাঝে অভ্যন্তরীণ নেতৃত্বের দ্বন্দ্বও প্রকাশ পেয়েছে। দলের নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে সমঝোতা, মনোমালিন্য এবং সামাজিক মাধ্যমে পালটাপালটা বক্তব্যের লড়াই বিভিন্ন সময় লক্ষ্য করা গেছে।

এছাড়াও, দলের শীর্ষ পদে যারা নাম করছে, তাদের মধ্যে রয়েছে জুলাই আন্দোলনের নেতারা, যা দলের রাজনৈতিক অবস্থান ও নেতৃত্ব নিয়ে অতিরিক্ত আলোচনা সৃষ্টি করেছে। অনেকের ধারণা, দলের বিভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের লোকদের একত্রিত করার পর দীর্ঘমেয়াদে ঐক্য বজায় রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে, দলটির উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন নাহিদ ইসলাম, যিনি বর্তমানে দলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

ছাত্র আন্দোলনের নেতারা যে নতুন দল গঠন করছেন, তার জন্য ঢাকার সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউতে বৃহৎ সমাগমের আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বিবিসি বাংলাকে জানান, অন্তত দুই লাখ লোকের সমাগম ঘটিয়ে নতুন দল ও শীর্ষ নেতাদের নাম ঘোষণা করা হবে।

সারজিস আলম বলেন, “আমরা দুই লাখের মতো মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ঢাকার ভেতর뿐 নয়, ঢাকার বাইরে থেকেও নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা এই সমাগমে অংশগ্রহণ করবেন।” দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

শীর্ষ পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তারা প্রায় সবাই আন্দোলনের পরিচিত মুখ হলেও, কিছু নেতার ব্যাপক পরিচিতি না থাকলেও আলোচনা চলছে। নেতৃত্ব নির্বাচন কি শুধুমাত্র ‘ফেসভ্যালু’ দেখে বা সাংগঠনিক দক্ষতা বিবেচনা করে তা স্পষ্ট নয়।

প্রক্রিয়াগত জটিলতা নিয়ে দলের নতুন সদস্য যোগের ঘোষণা ইতিমধ্যেই জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক শিবির নেতা আলী আহসান জোনায়েদ জানিয়েছেন, এবং একই ধরনের মন্তব্য আরও দুই নেতা প্রদান করেছেন।

দলের গঠন প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব নিয়ে যে দ্বন্দ্ব আছে, তা স্পষ্ট হলেও সেই দ্বন্দ্ব কতটা প্রশমিত হয়েছে – তা নিয়ে প্রশ্ন করলে, সারজিস আলম জানান, “আমরা এটিকে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখি না; বরং দেখছি কে কোন জায়গায় কতটা পরিশ্রম করেছে এবং কেন ডিজার্ভ করে। আমরা এভাবেই নেতৃত্বের স্থান ঠিক করছি।”

তিনি আরও বলেন, “এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে সিদ্ধান্ত আসবে, সেখানে পাঁচজন সন্তুষ্ট না হলেও, বাকি পঁচানব্বই জন ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে যাবে।”

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে অনেক নতুন নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতার বিষয় আছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, এই মতপার্থক্য সামনের দিনে আমাদেরকে বড়ভাবে প্রভাবিত করবে না; আমরা একত্রিত আছি এবং একতার ভিত্তিতে এগিয়ে যাব।”

ছাত্রদের নতুন দলে শীর্ষ পদে বসছেন, উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করা নাহিদ ইসলাম। দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে বিভিন্ন মত, পথ ও রাজনৈতিক আদর্শের লোক যুক্ত হচ্ছেন। জাতীয়তাবাদী থেকে শুরু করে ধর্মীয় বা এমনকি রাজনীতিতে ধর্ম চান না এমন আদর্শের তরুণরাও এই দলে রয়েছেন।

বাংলাদেশে আদর্শভিত্তিক বিভিন্ন দল থাকলেও, একই দলে সব আদর্শের সম্মিলন সেভাবে দেখা যায় না। রাজনীতিতে দলগুলোর আদর্শিক বৈরিতা প্রচলিত। ফলে, নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব বড় কোনো বিভাজনের কারণ হবে না – নেতারা তা বললেও আদর্শিক বিভাজনের সমাধান তারা কীভাবে করে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।

ছাত্ররা আদর্শিক বিভাজন এড়াতে সেক্যুলারিজম, ধর্ম বা জাতীয়তাবাদের মতো ধারায় লিপ্ত হতে চায় না। সারজিস আলম বলেন, “এখানে মধ্যপন্থার রাজনীতি, বাংলাদেশপন্থা এবং নাগরিক পরিচয়ই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদেরকে বাঙালি ও বাংলাদেশি বলা হয়েছে, কিন্তু আমরা নাগরিক হিসেবে একত্রিত হতে চাই।”

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেছেন, “বাম-ডানের বিভক্তি এবং ধর্মীয় বিভাজন দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে একত্রিত করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজনীয় কাজগুলোতে একমত হওয়াই মূল।”

তিনি আরো বলেন, “যদি দেশের উন্নয়নের কথা বিবেচনা করা হয়, তাহলে কোনো মতাদর্শ জরুরি নয়; বরং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে মানুষের অধিকার রক্ষা করা জরুরি

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

একলা ক্রেডিট নিতে গিয়ে দেশ ধ্বংস করবেন না’ — মির্জা আব্বাস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আমি আশ্চর্য হয়ে যাই, কিছু কিছু ছেলে বলে ১৭ বছর আপনারা কী...