26 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৫

খেজুর: খাদ্য ও ঔষধের এক অপূর্ব সমন্বয়

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আঁশ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই ফলটি ফাইটো—অর্থাৎ উদ্ভিদ হরমোন—সমৃদ্ধ হওয়ায়, নিয়মিত খেলে এটি বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি হ্রাস, হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক এবং সঠিক মলত্যাগে সাহায্য করে, ফলে শরীর থেকে ক্ষতিকর বর্জ্য দূর হয়।

অনেকে মনে করে, মিষ্টিজাতীয় হওয়ায় খেজুর ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, খেজুর আসলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। এতে প্রচুর ক্যালরি থাকলেও, শক্তির ভালো উৎস হিসেবে সব বয়সের মানুষই এর পুষ্টিগুণ গ্রহণ করতে পারেন। এখন খেজুর কেন এত উপকারী, তা দেখা যাক:


খেজুরে প্রচুর দ্রবণীয় আঁশ থাকার কারণে, এক সপ্তাহ ধরে দিনে দুটি করে খেলে হজম প্রক্রিয়া এবং সঠিক মলত্যাগে সহায়তা করে। দ্রবণীয় আঁশ মলকে নরম করে, আবার অদ্রবণীয় আঁশ মলের পরিমাণ বাড়ায়। এভাবে খেজুর কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।


খেজুরে থাকা প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কোষকে ফ্রি র‍্যাডিক্যালের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। ফ্রি র‍্যাডিক্যাল কোষ ধ্বংস করে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে বলে মনে করা হয়। অন্যান্য ফলের তুলনায় খেজুরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি থাকায়, এতে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যারোটিনয়েড ও ফেনোলিক অ্যাসিড বিদ্যমান, যা ডায়াবেটিস, আলঝেইমার এবং কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়ক। এছাড়াও, ফ্ল্যাভোনয়েড প্রদাহ কমাতে, ক্যারোটিনয়েড চোখের অসুখ প্রতিরোধে এবং ফেনোলিক অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।


মিষ্টিজাতীয় ও শর্করাসমৃদ্ধ হলেও, খেজুর ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। ২০২০ সালের একটি জরিপে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ১৬ সপ্তাহ ধরে দিনে তিনটি করে খেজুর খাওয়ানোর পর দেখা যায়, তাদের খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমে গেছে এবং ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া, খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাও বেশি বাড়ে না।


খেজুরে প্রচুর খনিজ—যেমন কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও সেলেনিয়াম—থাকায়, এগুলো হাড়কে শক্তিশালী করতে এবং অস্টিওপরোসিসের মতো রোগ থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


খেজুরে বিদ্যমান ফাইটো হরমোন ত্বকের বলিরেখা প্রতিরোধে সহায়ক, যা ত্বককে তরতাজা ও যুবসম্ভব রাখে। ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রসাধনীতে খেজুরের নির্যাস ব্যবহার করা হয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৫ শতাংশ খেজুর বিচি নির্যাস দিয়ে তৈরি লোশন নিয়মিত ব্যবহারে চোখের নিচের কালো দাগ অনেকটাই কমে যায়। ফলে, ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা ও যৌবন বজায় রাখতে খেজুর একটি কার্যকর খাদ্য।


খেজুর শুধুমাত্র স্বাদে মিষ্টি নয়, বরং পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল। নিয়মিত খেলে এটি হজম প্রক্রিয়া, হৃদরোগ প্রতিরোধ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং ত্বকের যত্নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

শেখ হাসিনা ফিরে এলে জনগনই ব্যবস্থা নিবে- বিএনপি মহাসচিব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনেকেই আশঙ্কা করছেন, ফ্যাসিবাদী চরিত্র নিয়ে শেখ হাসিনা আবারো ফিরে...