25 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৫

আদানির ১৪১ মিলিয়ন ডলার দাবি করা অঙ্কের চেয়ে কম বকেয়া রয়েছে-পিডিবি

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

আদানি চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত নিয়ম মেনে কয়লার দাম নির্ধারণ করছে না বলছে পিডিবি।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড লিমিটেডের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার দাবির বিরোধিতা করেছে। সংস্থাটি বলছে, আদানির কয়লা মূল্য নির্ধারণের পদ্ধতির কারণে ১৪১ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত চার্জ করা হয়েছে। আদানি জানাচ্ছে, পিডিবির কাছে তাদের ৭৭১ মিলিয়ন ডলার পাওনা আছে। তবে পিডিবির হিসাব অনুযায়ী প্রকৃত পাওনা প্রায় ৬৩০ মিলিয়ন ডলার।

বিদ্যুৎ দফতরের সচিব ফারজানা মমতাজ বলেন, ‘আমরা আদানির মূল্য নির্ধারণের পদ্ধতির সঙ্গে একমত নই। আমরা যা ন্যায্য মনে করি, সেই অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ করছি।’

জানুয়ারিতে, আদানিকে দুবার চিঠি দিয়ে অতিরিক্ত চার্জের ব্যাখ্যা চেয়েছে পিডিবি এবং বিলম্ব পরিশোধের ফি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ক্রমবর্ধমান বকেয়া ও অর্থ পরিশোধের সমস্যা

ডলার সংকটের কারণে ২০২৪ সালের অক্টোবরে আদানির বকেয়া পাওনা ৮৪০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। একপর্যায়ে, ৭ নভেম্বরের মধ্যে পাওনা পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয় আদানি। এদিকে, বিগত অক্টোবরে বাংলাদেশের সামগ্রিক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ঋণের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছায়, যার মধ্যে ৪৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিদ্যুৎ খাতের।

গত ছয় মাসে পিডিবি আদানিকে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে এবং বর্তমানে প্রতি মাসে ৮০-৮৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করছে। গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই পরিমাণ ১০০ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিদ্যুৎ সরবরাহও বাড়িয়েছে আদানি গরমের কারণে দেশে। গত সপ্তাহে তারা প্রতিদিন ১,৪৫০-১,৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে, যা ১৮ মার্চ সর্বোচ্চ ১,৫১১ মেগাওয়াটে পৌঁছায়।

বিতর্কের মূল বিষয়বস্তু কী?

১. আদানি চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত নিয়ম মেনে কয়লার দাম নির্ধারণ করছে না, দাবি পিডিবির। চুক্তিতে বলা ছিল, কয়লার মূল্য নির্ধারণে দুটি সূচক—অস্ট্রেলিয়ান নিউক্যাসল এবং ইন্দোনেশিয়ান কয়লা সূচক (আইসিআই) ব্যবহার করতে হবে। তবে আদানি আইসিআই১-এর পরিবর্তে অতিরিক্ত দুইটি সূচক (আইসিআই২ ও আইসিআই৩) ব্যবহার করছে, যা ব্যয়ের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।

২. আরেকটি বিতর্কের বিষয় হলো কয়লার দামে ছাড়। ২০২৩ সালে আদানি এই ছাড় প্রয়োগ করলেও ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে তা বন্ধ করে দেয়। আদানির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের পাওনা পরিশোধের পরিবর্তে পিডিবি ছাড় দাবি করছে। প্রথমে তারা বকেয়া পরিশোধ করুক, তারপর আমরা ছাড় নিয়ে আলোচনা করতে পারি।’

সমাধানের পথ!

ঈদ-উল-ফিতরের পরবর্তী সময় আদানির সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পিডিবি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম, তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে আদানিকে কয়লার মূল্য নির্ধারণ নিয়ে দুটি চিঠি পাঠিয়েছি, তবে তাদের প্রতিক্রিয়া সন্তোষজনক নয়।’

সরকারি পর্যালোচনা কমিটি বলছে, আদানির মূল্য নির্ধারণের পদ্ধতি বিদ্যুতের খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাছাড়া, আদানি প্রতি মাসে বিলম্বে পরিশোধের জন্য ২ শতাংশ ফি নির্ধারণ করেছে, যা বার্ষিক গড়ে ২৭ শতাংশে পৌঁছায়। ২০১৭ সালের এপ্রিলে হওয়া চুক্তির আওতায় আদানি ইতোমধ্যে পিডিবির কাছ থেকে ৫০ মিলিয়ন ডলার বিলম্ব ফি আদায় করেছে।

বিদ্যুৎ খরচ কমানোর চেষ্টা

সরকারি পর্যালোচনা কমিটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী দামে পেতে, পিডিবিকে আদানির সঙ্গে কয়লার মূল্য কমানোর বিষয়ে আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছে; ১,৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষয়ে। আদানি বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছিল ২০২৩ সালে, তাদের বিদ্যুতের দাম অন্যান্য কেন্দ্রের তুলনায় কম হবে। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের খরচ ছিল ১১.৮৩ টাকা, যেখানে আদানি বিদ্যুতের মূল্য ছিল ১৪.৮৭ টাকা।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

শেখ হাসিনা ফিরে এলে জনগনই ব্যবস্থা নিবে- বিএনপি মহাসচিব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনেকেই আশঙ্কা করছেন, ফ্যাসিবাদী চরিত্র নিয়ে শেখ হাসিনা আবারো ফিরে...