29 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ১, ২০২৫

‘জিবলি’ নিয়ে সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া, জনপ্রিয়তার কারণ

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

গত দুুই-তিন দিনে চেনা মানুষের ‘কার্টুন’ দেখতে দেখতে অবাক হয়েছেন নিশ্চয়ই! যার নাম ‘জিবলি আর্ট’। দেখেশুনে নতুন ‘ট্রেন্ড’-এ গা ভাসাতে ইচ্ছে হয়নি কি আপনারও? হয়তো খুঁজেও ফেলেছেন গুগলে। কী ভাবে বানাবেন নিজের জিবলি আর্ট কার্টুন! কিন্তু যা নিয়ে এত মাতামাতি, সেই ‘জিবলি’ আসলে কি বস্তু? কোথা থেকে পেল তার অমন আদ্ভুত নাম? সেই নামের অর্থই বা কি? কেন এবং কী ভাবে জনপ্রিয় হল জিবলি শিল্প?

জিবলি কী?

জিবলি আসলে একটি অ্যানিমেশন স্টুড়িওর নাম। যার জন্ম হয় ১৯৮৫ সালে, জাপানের টোকিয়োতে। উজ্জ্বল জলরং অথবা অ্যাক্রেলিক রং দিয়ে হাতে আঁকা হত ওই স্টুডিওর সমস্ত অ্যানিমেশন। খামখেয়ালি কল্পনায় আঁকা সেই সমস্ত ছবি থেকে ফুটে বেরোত অজানা সুখানুভূতি। সম্ভবত সেই বিষয়টিই দর্শকদের মন টানে। জাপানের ওই অ্যানিমেশনের জনপ্রিয়তা জাপানের গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছোয় অ্যানিমেশনের আন্তর্জাতিক দুনিয়ায়। ওয়ার্ল্ড ডিজনি অংশীদারির প্রস্তাব দেয় জিবলি স্টুডিওর। কার্টুন বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে জিবলি।

জিবলি নামের অর্থ কী?

জিবলি নামের নানা রকম অর্থ হয়। নানা দেশে এর ব্যবহারও রয়েছে। তবে জিবলি শব্দটির সবচেয়ে পুরনো উল্লেখ মেলে আরব দেশে। আরব্য শব্দ ‘জিবলি’ ব্যবহার করা হয় সাহারা মরুভূমির উত্তপ্ত এবং শুষ্ক হাওয়াকে বোঝানোর জন্য। জিবলি স্টুড়িওর তিন প্রতিষ্ঠাতার প্রধান যিনি, সেই জাপানি অ্যানিমেশন শিল্পী এবং চলচ্চিত্রকার হায়াও মিয়াজ়াকি অবশ্য ওই নাম বেছে নিয়েছিলেন ইতালির একটি বিমানের নাম থেকে।

জিবলির জনক, জাপানি অ্যানিমেশন শিল্পী এবং চলচ্চিত্রকার হায়াও মিয়াজ়াকি। ছবি: সংগৃহীত।

বিমানের নামে কার্টুন!

ক্যাপ্রোনি কা.৩০৯ নামের ওই বিমান ছিল সাহারা মরুভূমিতে ইতালির নজরদারি চালানোর বিমান। সেই বিমানের নামও ছিল জিবলি (ইতালীয় উচ্চারণে গিবলি)। বিমান নিয়ে আগ্রহী মিয়াজ়াকি সেই নাম জেনেছিলেন। নামের মানে জেনে আরও ভাল লেগেছিল তাঁর। নিজের স্টুডিয়ো তৈরি করার সময় তাই বেছে নিয়েছিলেন সেই নামই। জাপানি উচ্চারণে যা হয়েছিল জিবলি। মিয়াজ়াকি চেয়েছিলেন, জিবলি তার নামের অর্থের মতোই অ্যানিমেশনের দুনিয়ার পালে নতুন হাওয়া নিয়ে আসুক।

ক্যাপ্রোনি কা.৩০৯ নামের ওই বিমান ছিল সাহারা মরুভূমিতে ইতালির নজরদারি চালানোর বিমান। সেই বিমানের নামও ছিল জিবলি।

জনপ্রিয়তা

জিবলির জনপ্রিয়তা কতখানি, তার একটি হিসাব দেওয়া যাক। গত ৩৮ বছরে হাতেগোনা ২২টি ছবি তৈরি করেছে জিবলি স্টুডিও। টেলিভিশনের জন্য বানিয়েছে ৩টি ছবি। আর সেই সব ছবির প্রত্যেকটিই অ্যানিমেশন দুনিয়ায় আদৃত। জাপানের যে প্রথম দশটি ছবি আজও ব্যবসা দেয় এবং সর্বকালের সেরা ব্যবসা করেছে, তার মধ্যে চারটিই জিবলি স্টুডিওতে তৈরি। জিবলির ছবি অস্কার, গোল্ডেন বিয়ার, বাফতা, গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারও জিতেছে একাধিক বার। ২০২৪ সালের সেরা অ্যানিমেশন ছবির শিরোপা জিতেনিয়েছিলো জিবলি স্টুডিওরই তৈরি ‘দ্য বয় অ্যান্ড দ্য হেরন’। জিবলির তৈরি ছবি ‘স্পিরিটেড অ্যাওয়ে’ হল প্রথম ‘নন-ইংলিশ’ অ্যানিমেশন ছবি, যা মূল বিভাগে অস্কার জেতে। ২০২১ সালে জিবলির জনপ্রিয়তা দেখে টোকিওতে জিবলি মিউজ়িয়ামও তৈরি হয়। জিবলির দৌলতে মিয়াজ়াকি ২০২৪ সালে এশিয়ার ‘নোবেল প্রাইজ়’ র‌্যামন ম্যাগসেসাই পুরস্কারও পান।

জিবলি স্টুডিওর তৈরি ‘দ্য বয় অ্যান্ড দ্য হেরন’
জিবলির তৈরি ছবি ‘স্পিরিটেড অ্যাওয়ে’

জিবলির ট্রেন্ড

সম্প্রতি ওপেন এআই-এর চ্যাটজিপিটিতে ব্যবহারকারীরা দেখতে পান, তাঁরা তাঁদের ছবি জিবলি অ্যানিমেশনে বদলে নিতে পারছেন। বিষয়টি জানার পরেই চ্যাটজিপিটির নতুন সুবিধাটি নিয়ে হইচই পড়ে যায়। ওপেন এআই-এর সিইও স্যাম অল্টম্যান জানিয়েছেন, চ্যাটজিপিটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করতে নানা রকম ভাবনাচিন্তা করছিলেন তাঁরা। সেই সময়েই জিবলি আর্টের কথা তাঁদের মাথায় আসে। ওই প্রযুক্তি প্রকাশ্যে আনার পরেই চাহিদা তুঙ্গে ওঠে চ্যাটজিপিটির। অল্টম্যানের কথায়, ‘‘জিবলি ছবির চাহিদা সামাল দিতে গিয়ে চ্যাটজিপিটির গ্রাফিক প্রসেসিং ইউনিটের এখন-তখন দশা। তবে উদ্দেশ্য নিয়ে এটি করা হয়েছিল, তা যে সফল হয়েছে, তাতে আমরা খুশি।’’

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

রাজতন্ত্র-সমর্থক দলের বিরুদ্ধে কড়া ইঙ্গিত দিল নেপাল সরকার

নেপালে রাজতন্ত্র-সমর্থক রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির (আরপিপি) শীর্ষনেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবার ইঙ্গিত দিল নেপাল সরকার। এমনকি দুই...