Your Ads Here 100x100 |
---|
তাপ-প্রবাহের সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে শিশু ও বয়স্ক মানুষরা। তাপ-প্রবাহের সময় শিশু ও বয়স্ক মানুষদের নিয়ে দিনের বেলা ঈদের কেনা-কাটা করা থেকে সম্পূর্ণ রূপে বিরত থাকুন।
বাংলাদেশের বেশিভাগ জেলার উপর দিয়ে তাপ-প্রবাহ অতিক্রম করতেছে। যদি একান্ত ভাবে ঘরের বাহিরে বের হতে হয় তবে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। অবশ্যই পানির বোতল সাথে রাখবেন। কেউ অসুস্হত অনুভব করলে সাথে-সাথে ছায়াযুক্ত স্হানে নিয়ে শরীর ঠান্ডা করতে হবে খুবই দ্রত তম সময়ে।
হিট স্ট্রোক বা তাপ-প্রবাহজনিত স্ট্রোক কি?
হিট স্ট্রোক হল সবচেয়ে গুরুতর তাপজনিত অসুস্থতা। হিট স্ট্রোক হলে মানবদেহ তার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না: শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়, ঘাম সৃষ্টির প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয় এবং শরীর শীতল হতে অক্ষম হয়।
তাপপ্রবাহের সময় মানুষ হিট স্ট্রোক করে কেন কিংবা হিট স্ট্রোকের কারণে মানুষের মৃত্যু হয় কেন?
মানুষের শরীর খুবই তাপমাত্রা সংবেদনশীল হওয়ার তাপ-প্রবাহের সময় কোন মানুষ দীর্ঘসময় বাহিরে অবস্থান করলে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায় ও মানুষের শরীর বিভিন্ন ভাবে তাপমাত্রা কমানোর কাজ শুরু করে দেয়! মানবদেহের তাপমাত্রা কমানোর অন্যতম একটি প্রক্রিয়া হলও ঘাম তৈরি। যখন আমাদের শরীর থেকে বাষ্পীভবনের মাধ্যমে ঘাম শুকিয়ে যায় তা আমাদের শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে আনে! তবে বাতাসের মধ্যে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ যদি ৭৫% এর বেশি হয় তখন মানুষের শরীর হতে ঘাম শুকাতে পারে না যেহেতু ইতিমধ্যে বাতাসের জলীয়বাষ্প ধারণক্ষমতা একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ধারণক্ষমতার কাছা-কাছি অবস্থায় থাকে।
পদার্থ বিজ্ঞানের সুত্র অনুসারে তাপ সাধারণ অবস্থায় অপেক্ষাকৃত গরম স্থান থেকে ঠাণ্ডা স্থানে গমন করে। যেমন রান্না করার সময় স্টিলের তৈরি চামচ রান্নার পাতিলের সংস্পর্শে আসলে চামচের হাতলে গরম অনুভব করি। তাপ-প্রবাহের সময় যখন বায়ুর তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশি থাকে তখন মানুষের শরীর বাতাসের মধ্যে তাপ ত্যাগ করতে পারে না যেহেতু মানুষের শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ৯৮ দশমিক ৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট অপেক্ষা বাতাসের তাপমাত্রা বেশি থাকে।
তাপ প্রবাহের সংজ্ঞা নির্ধারণে রাতের তাপমাত্রাকে বেছে নেওয়া কারণ হলও গ্রীষ্মকালে রাতে মানুষ যখন ঘুমায় তখন শরীর তাপ ত্যাগ করে শীতল হয় ও মানবদেহ পরবর্তী দিনের কাজের জন্য শক্তি সঞ্চয় করে। তাপপ্রবাহের সময় যেহেতু রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক সময়ের তাপমাত্রা অপেক্ষা অনেক বেশি থাকে তাই মানব দেহ তাপ ত্যাগ করে যথেষ্ট পরিমাণে শীতল হতে পারে না; পারলেও মানুষের হার্টকে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয় শরীর হতে তাপ বের করে দিতে। ঐ একই কথা প্রযোজ্য দিনের বেলাতেও।
তাপ-প্রবাহের সময় দিনের বেলায় দীর্ঘ সময় বাহিরে অবস্থান করে কাজ করলে কিংবা বাহিরে ঘোরাঘুরি করলে মানুষের শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াগুলো বিঘ্নিত হয় কিংবা ব্যর্থ হয় এবং মানুষের শরীর তাপ ত্যাগ করে শীতল হতে অক্ষম হয়। মানুষের শরীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে শরীরের তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রী সেলসিয়াস কিংবা ১০৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠে গিয়ে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। হিট স্ট্রোকের কারণে মানুষ স্থায়ী ভাবে পঙ্গুত্ব বা মৃত্যুবরণ কারতে পারে যদি আক্রান্ত ব্যক্তির জরুরী চিকিৎসা না করা যায়।