29 C
Dhaka
বুধবার, এপ্রিল ২, ২০২৫

নেপালে রাজতন্ত্র এবং হিন্দু রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলন

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

মাওবাদী নেতা পুষ্পকমল দাহলের (প্রচণ্ড নামে যিনি পরিচিত নেপালে) ডাকে সাড়া দিয়ে হাতে তুলে নিয়েছিলেন রাইফেল। রাজতন্ত্র উচ্ছেদের দাবি তুলে শামিল হয়েছিলেন ‘সশস্ত্র বিপ্লবে’। নেপালের সেই প্রাক্তন মাওবাদী কমান্ডার দুর্গা প্রসাই এখন হিমালয় বেষ্টিত দেশটিতে রাজতন্ত্র এবং হিন্দু রাষ্ট্রের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছেন!

নেপালে রাজতন্ত্র ও হিন্দুত্ব ফিরিয়ে আনার দাবিতে গড়ে ওঠা সাম্প্রতিক আন্দোলনে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে একমাত্র রাষ্ট্রীর প্রজাতন্ত্র পার্টি (আরপিপি) যোগ দিয়েছে। এর পাশাপাশি রয়েছে কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। আন্দোলন পরিচালনার জন্য গড়ে ওঠা ‘জয়েন্ট পিপল্‌স মুভমেন্ট কমিটি’র (জেপিএমসি) নেতৃত্বের মধ্যে অন্যতম হলেন দুর্গা। গত শুক্রবার কাঠমান্ডুতে অশান্তির সূচনা তিনিই করেছিলেন বলে পুলিশের অভিযোগ। সে দিন একটি গাড়ি চালিয়ে দুর্গা সজোর ধাক্কা মেরেছিলেন পুলিশি ব্যারিকেডে। আর তার পরেই রাজপথে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ।

গত শুক্র এবং শনিবার থেকে কাঠমান্ডু-সহ সংলগ্ন এলাকায় রাজা জ্ঞানেন্দ্রের সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যু এবং শতাধিক মানুষের আহত হওয়ার ঘটনার জেরে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে নেপালের বিস্তীর্ণ অংশ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাঠমান্ডু-সহ বিভিন্ন শহরে বলবৎ করতে হয়েছে কারফিউ। নামাতে হয়েছে সেনা। হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে ‘রাজতন্ত্রের সমর্থক’ হিসাবে পরিচিত আরপিপি-র সহ-সভাপতি রবীন্দ্র মিশ্র এবং সাধারণ সম্পাদক ধাওয়াম সমশের রানা-সহ শতাধিক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু এখনও খোঁজ মেলেনি প্রাক্তন মাওবাদী দুর্গার। যদিও সোমবার এক ভিডিয়োবার্তায় দুর্গা জানিয়েছেন, এখন কাঠমান্ডুর একটি মন্দিরে রয়েছেন তিনি।

ঘটনাচক্রে, ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত টানা এক দশক নেপালে রাজতন্ত্র উচ্ছেদের দাবিতে প্রচণ্ডর নেতৃত্ব ‘কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল (মাওবাদী)’-র সশস্ত্র শাখা পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি যে গেরিলা লড়াই চালিয়েছিল, দুর্গা ছিলেন তার অন্যতম যোদ্ধা। ২০০৬ সালে মাওবাদীরা অস্ত্র ছেড়ে গণতন্ত্রে শামিল হয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, প্রায় দু’দশক আগে ভারতের উত্তরের পড়শি দেশ নেপালে প্রচলিত ছিল রাজতন্ত্র। শেষ রাজা ছিলেন জ্ঞানেন্দ্র, ২০০৬ সালে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন।

এর পরে ২০০৮ সালের মে মাসে সংবিধান সংশোধন করে ২৪০ বছরের পুরনো রাজতন্ত্র ভেঙে নেপালে প্রতিষ্ঠিত হয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা। ২০১৫ সালে অনুমোদিত হয় নতুন ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ সংবিধান। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর জ্ঞানেন্দ্র নেপালের সাধারণ নাগরিক হিসাবে কাঠমান্ডুর ‘নির্মল নিবাস’-এ বাস করেন। তাঁর কোনও রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই। অনুমতি নেই রাজপ্রাসাদে যাওয়ার। এমনকি, সরকারি কোনও সুবিধাও তিনি পান না। গত ১৭ বছরে ‘গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ’ নেপালে ১৩ বার সরকার বদল হয়েছে। বীতশ্রদ্ধ আমজনতার একাংশ তাই ভরসা রাখতে চাইছে রাজতন্ত্রেই।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন—বাংলাদেশে ধর্মীয় কট্টরপন্থীদের নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ

গতকাল দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশ হয়েছে ‘অ্যাজ বাংলাদেশ রিইনভেন্টস ইটসেলফ, ইসলামিস্ট হার্ড-লাইনার্স সি অ্যান ওপেনিং’ শিরোনামের প্রতিবেদন। এতে বাংলাদেশে...