Your Ads Here 100x100 |
---|
খঃ ফাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফিলিস্তিনে ইজরাইলি হামলার প্রতিবাদে আলাদাভাবে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববদ্যালয় প্রশাসন ও ইবি জিয়া পরিষদ। আজ বুধবার বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের সামনে জিয়া পরিষদের মানববন্ধন আয়োজিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানের পর বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা সংলগ্ন রাস্তায় ইবি প্রশাসনের কেন্দ্রীয় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
উভয় মানববন্ধনেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। জিয়া পরিষদ আয়োজিত মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সহ ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, খেলাফত ছাত্র মজলিশ, ছাত্র ইউনিয়ন ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ইজরায়েলের গণহত্যাকে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জাতীয়তাবাদী কর্মচারী ও শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকেও ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন ও ইজরায়েলের কঠোর সমালোচনা করা হয়।
ইবি গ্রীন ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. শহীদ মো. রেজাউল বলেন, ইজরায়েল যে অবস্থান নিয়েছে সে অবস্থান মানবতার বিরুদ্ধে। এই ঘৃণ্য গণহত্যা প্রতিহত করতে হলে মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান থাকবে আপনার আন্তর্জাতিক পরিচিতির মাধ্যমে ফিলিস্তিনের পক্ষে জনমত গড়ে তুলুন। আপনারা মানবতার পক্ষে দাঁড়ান, যার যার অবস্থান থেকে আওয়াজ তুলুন।
ইবি জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. খালিকুজ্জামান খান বলেন, ইজরায়েল ফিলিস্তিনের ওপর যে নৃশংস-বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে আমরা তার নিন্দা, ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। ইহুদিদের এই হত্যাকান্ডে ৫০ হাজারেরও অধিক ফিলিস্তিনি শহীদ হয়ে গেছেন। তাই আজ থেকে যাবতীয় ইসরাইলি ও এর সহযোগী রাষ্ট্রগুলোর পণ্য আমরা সম্পূর্ণ বয়কট করবো। বয়কটের লিস্ট তৈরিতে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে যেন কোনো পণ্য প্রতিহিংসার শিকার না হয়, বিতর্কিত লিস্ট না তৈরি হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা “ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন; ফিলিস্তিনের স্মরণে, ভয় করি না মরণে; ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ, ইসরায়েল নিপাত যাক” স্লোগান দিতে থাকেন।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেন্দ্রীয় মানববন্ধনে যোগ দেন সমবেত জনতা। এসময় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখে “কমপ্লিট শাটডাউন” পালন করা হয়।
ইবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফিলিস্তিনে মুসলিমদের ওপর যে হামলা হচ্ছে তার প্রতিবাদ করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। তবে যেহেতু আমরা দূরে আছি তাদের জন্য সরাসরি সাহায্য করার উপায় আমাদের নেই। গাজার মুসলিমদের ওপর যেন আল্লাহ্ তায়ালা রহমত নাযিল করেন সেই দোয়া করবো। পাশাপাশি ইসরাইলকে যেন তিনি ধ্বংস করে দেন সেই দোয়াও করবো।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী বলেন, জায়নিস্ট ইহুদিবাদীরা যে ঘৃণ্য আচরণ করছে তা ক্ষমার অযোগ্য। OIC সহ তাবৎ মুসলিম বিশ্ব এখনো কিভাবে হাত গুটিয়ে বসে আছে তা বোধগম্য হচ্ছে না। ব্যক্তিগতভাবে আমার দেহের শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত আমি ইসরায়েলের পতন দেখতে চাই।
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, আমাদের বক্তব্য নতুনভাবে বলার কিছু নেই। আপনারা সবাই দেখছেন ইসরায়েল কীভাবে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে। আমরা যখনই সুযোগ পাবো তখনই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবো। আজকের এই নিন্দা এই ক্ষোভ শিক্ষক-ছাত্র-কর্মকর্তা সবার হৃদয়ের ভাষা। ইসরায়েলকে অবৈধ রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হোক। আজকে শুধু সাধারণ মানুষরাই ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়িয়েছেন কিন্তু কোনো রাষ্ট্রনায়ক নেই। ইসরাইল মানবতার শত্রু শুধু প্যালেস্টাইনের না। আজ শিক্ষার্থীরা যে স্লোগান যে বাণী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তুলেছো তোমাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। আমরা সবাই জেনোসাইডের বিচার চাই। ইসরাইলের বিরুদ্ধে এই সংগ্রাম আমরা অব্যাহত রাখবো।
অনুষ্ঠানের শেষে দোয়ায় ইসরাইলের পতন ও ফিলিস্তিনিদের মুক্তি কামনা করে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানানো হয়।