26 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৫

আওয়ামী ঘনিষ্ঠ থেকে বিএনপির পদে: বিতর্কিত বাচ্চুকে ঘিরে নওগাঁয় রাজনৈতিক অস্থিরতা

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
নিয়ামতপুর, নওগাঁ প্রতিনিধি:

একজন সময়ের আওয়ামী লীগ আশীর্বাদপুষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান কীভাবে এখন বিএনপির উপজেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে? এই প্রশ্ন ঘিরেই নিয়ামতপুরে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ক্ষোভ ও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে।

৬নং পাড়ইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামালকে দুর্নীতির অভিযোগে পদচ্যুত করার পর ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জাহাঙ্গীর কবির বাচ্চু। তাঁকে নিয়োগ দেন তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সাধন চন্দ্র মজুমদার। দায়িত্বকালীন স্বল্প সময়েই বাচ্চুর বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ব্যর্থতার অভিযোগ ওঠে। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা তখন তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

সাবেক খাদ্যমন্ত্রীর নিয়োগপ্রাপ্ত বাচ্চু এখন বিএনপির সাংগঠনিক নেতা, ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বলছেন—”তিনি আওয়ামী এজেন্ট”

বিএনপিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ: উঠছে প্রশ্ন

সম্প্রতি বাচ্চুকে উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (২) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। নেতাকর্মীরা বলছেন, একজন ব্যক্তি যিনি একসময় আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হয়ে সুবিধা নিয়েছেন, তিনি কীভাবে এখন বিএনপির নেতৃত্বে আসেন?

স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ—বাচ্চু বিএনপির অভ্যন্তরে থেকেই আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করেছেন। তিনি সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেও বিএনপিকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছেন বলে দাবি করেন অনেকেই।

“আমরা জানতাম না” — উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছালেক চৌধুরী

বিএনপির নিয়ামতপুর উপজেলা সভাপতি ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মো. ছালেক চৌধুরী বলেন,
“কমিটি গঠনের সময় তিনজন সদস্যের নাম নির্ধারিত ছিল। কিন্তু জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অনুমতি ছাড়া অতিরিক্ত দুইজন—জাহাঙ্গীর কবির বাচ্চু ও ইসহাক আলীর নাম ঘোষণা করেন, যা আমাদের জানানো হয়নি।”

তারেক রহমানের নির্দেশনার সাথে সাংঘর্ষিক?

বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্টভাবে বলেছেন—
“আওয়ামী লীগে যোগদানকারী কেউ বিএনপির সদস্য হতে পারবে না। কেউ তাকে দলে নিলে, সেই নেতাকেও বহিষ্কার করা হবে।”
এই নীতির আলোকে বাচ্চুর অন্তর্ভুক্তি এবং তাঁকে আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারী নেতাদের ভূমিকা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।

ব্যক্তিগত স্বার্থে রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাচ্চু হয়তো ব্যক্তিগত সুবিধা ও নিরাপত্তার জন্যই বিএনপিতে প্রবেশ করেছেন। এখন তিনি এমপি পদপ্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের ছত্রছায়ায় নিজ অবস্থান শক্ত করতে চাইছেন।

দলের মধ্যে আস্থাহীনতা ও ক্ষোভ

এই ঘটনার জেরে নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপিতে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এমন বিতর্কিত নেতাদের পদোন্নতি দলের আদর্শ ও কর্মীদের আত্মবিশ্বাসকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

শেষ কথা:
রাজনৈতিক মাঠে সুবিধাবাদীদের উত্থান কোনো নতুন ঘটনা নয়। তবে এ ধরনের ঘটনা রাজনৈতিক দলগুলোর ভিত নাড়িয়ে দিতে পারে। এখন দেখার বিষয়, বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেয়।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

শেখ হাসিনা ফিরে এলে জনগনই ব্যবস্থা নিবে- বিএনপি মহাসচিব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনেকেই আশঙ্কা করছেন, ফ্যাসিবাদী চরিত্র নিয়ে শেখ হাসিনা আবারো ফিরে...