Your Ads Here 100x100 |
---|
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকত্বের আবেদনের অংশ হিসেবে ইমিগ্রেশন সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন নিউইয়র্ক সিটির কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভের সংগঠক মহসেন মাহদাবি।
গ্রিনকার্ডধারী এই শিক্ষার্থীর আগামী মাসে স্নাতক সম্পন্ন করার কথা ছিল। তবে তার আগেই সোমবার, ভারমন্টের কোলচেস্টার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাহদাবির আইনজীবী লুনা দ্রুবি দাবি করেছেন, গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধবিরোধী ক্যাম্পাস বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় তাকে আটক করা হয়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একই ধরনের অভিযোগে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল এবং টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের রুমেইসা ওজতুর্ককেও গ্রেপ্তার করেছে কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া আরও অনেককেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মাহদাবির গ্রেপ্তারের ঘটনায় ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বিবিসি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, দুজন পুলিশ সদস্য তাকে একটি গাড়িতে তুলে নিচ্ছেন।
আইনজীবী দ্রুবি বলেন, “শুধু ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলার জন্য এবং ফিলিস্তিনি পরিচয়ের কারণেই তাকে আটক করা হয়েছে। গাজায় সংঘটিত নৃশংসতার বিরুদ্ধে যাঁরা মুখ খুলছেন, তাঁদের দমন করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এটি স্পষ্টতই অসাংবিধানিক।”
মাহদাবিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বহিষ্কার বা অন্য কোনো স্থানে স্থানান্তরের বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন দ্রুবি। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারক উইলিয়াম সেশনস দ্রুতই ওই নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করেন।
আদালতে জমা দেওয়া নথি অনুযায়ী, মাহদাবির জন্ম পশ্চিম তীরের একটি শরণার্থী শিবিরে। তিনি ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। দর্শনে পড়াশোনা করা মাহদাবি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী, যার বিশ্বাসের কেন্দ্রে রয়েছে অহিংসা ও সহানুভূতির আদর্শ। ২০১৫ সাল থেকে তিনি গ্রিনকার্ডধারী বলে জানান তাঁর আইনজীবী।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্যালেস্টাইন স্টুডেন্ট সোসাইটি’-র সহ-প্রতিষ্ঠাতা মাহদাবি গত ডিসেম্বরে সিবিএস-এর ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তোলেন। যদিও ইসরায়েল এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত মাসে মার্কিন সিনেটর মার্কো রুবিও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ডে’ জড়িত থাকার অভিযোগে তিন শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, অভিযোগ উঠেছে— কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষার্থীদের ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ তকমা দিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করছে।
ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, “নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়ার শেষ পর্যায়ে এসে মহসেন মাহদাবিকে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করেছে আইসিই। তাকে অবশ্যই ন্যায়সঙ্গত প্রক্রিয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।”